নিসা আক্তার দিনা, গোপালগঞ্জঃ
বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকায় দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেল, কর অঞ্চল-৩ ঢাকা এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মনির হোসেনকে বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) কর অঞ্চল-৩ ঢাকা এর কর কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ বদলি করা হয়। অফিস আদেশে অভিযোগ ওঠা কর্মকর্তা মনির হোসেন কে গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেল থেকে রাজবাড়ী-৫৬ সার্কেল বদলি/পদায়ন করা হয়েছে। একই আদেশে রাজবাড়ী- ৫৬ সার্কেলের অতিরিক্ত কর কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন কে গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেলে পদায়ন করা হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার ১২ এপ্রিল দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকা সহ একাধিক অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় “গোপালগঞ্জের সহকারী কর কমিশনারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে গোপালগঞ্জ ট্যাস্কেস বার এসোসিয়েশনের আইনজীবীদের লিখিত অভিযোগের সূত্রে বলা হয়ে ছিল যে, গোপালগঞ্জ -৫০ সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মনির হোসেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে গোপালগঞ্জে যোগদান করেই বহিরাগত কিছু নারী ও পুরুষ দালালদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং তাদের মাধ্যমে কর দাতাদের আইনি সেবা নিতে নির্দেশ দেন। পরে তাঁদের মাধ্যমে বিভিন্ন করদাতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সরকারি কোষাগারে নামমাত্র কর জমা দিয়ে রাষ্ট্রকে ফাঁকি দিতে শুরু করেন। এছাড়াও তার নিজ দপ্তরের অফিস সহকারী ইয়াহিয়া মুন্সী, নৈশপ্রহরী সোহরাব হোসেন ও আউটসোর্সিং কর্মচারী মিরাজ হোসেন সহ অন্যান্য বহিরাগত দালালদের সাথে নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাজারের দোকান, ইট ভাটা, বাড়ি-গাড়ীর মালিক সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা আদায় করে ভাগবাটোয়ারা করে ভোগ করে আসছেন। এছাড়াও তিনি তার অফিস রুমে বহিরাগত সুন্দরী নারী দালালদের ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে কাজের নামে রঙ্গ তামাশা করতেন। এতে সরকারি দপ্তরের ভাবমূর্তি ব্যপক ভাবে নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এছাড়াও তার পূর্বের কর্মস্থল কিশোরগঞ্জ-১৪ সার্কেল ময়মনসিংহ কর অঞ্চলে ইন্সপেক্টর পদে দায়িত্ব প্রাপ্ত থাকা অবস্থায় পরিদর্শনে গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের উৎকোচ আদায় করতেন। একপর্যায়ে ব্যবসায়িদের অভিযোগের ভিত্তিতে কতৃপক্ষ তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে তিনি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে পদোন্নতি নিয়ে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার পদে গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেলে পদায়িত হন। গোপালগঞ্জে যোগদান করেই উৎকোচ আদায়ের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। অনুসন্ধান করে একটি গোপন সূত্রে দৈনিক আমাদের কন্ঠের প্রতিনিধি জানতে পেরেছিল যে, সহকারী কর কমিশনার মনির হোসেন ঘুষের টাকায় তার নিজ জেলা কুমিল্লায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তবে গোপালগঞ্জ -৫০ সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মনির হোসেন শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক আমাদের কন্ঠকে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মনির হোসেন গোপালগঞ্জ -৫০ সার্কেলে যোগদান করার পর থেকে কোন মাসেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেননি।