কলাপাড়ায় বরাদ্ধ হওয়া সেতুর স্থান নির্ধারন নিয়ে তুলকালাম কান্ড

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

এস এম আলমগীর হোসেন, কলাপাড়াঃ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ছাপড়া খালের ওপর গার্ডার সেতু নির্মানের জায়গা নির্ধারন নিয়ে চলছে তুলকালাম কান্ড। স্থান নির্ধারন ও বরাদ্ধকৃত সেতু অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। এতে দুর্ভোগে পড়বে কয়েকশ পরিবারের মানুষ। ব্যাঘাত ঘটবে কয়েক হাজার একর জমির চাষাবাদ। নির্ধারন করা জায়গায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন চায় এলাকাবাসী।

সরজনিমে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের থানখোলা স্লুইস খালটি ওই ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামসহ ওই এলাকাটির তিন পাশ জুড়ে ঘিরে রেখেছে প্রবাহমান ছাপড়া খাল। এতে কয়েকশ পরিবার যাতায়াতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ছাপড়া খাল থেকে সাঁকো দিয়ে দৈনন্দিন শিশু কিশোর বয় বৃদ্ধ ও সাধারন মানুষের চলাচল করতে ভোগান্তী পোহাতে হয়। একটি কাঠের সাঁকো দিয়ে দৈনন্দিন শিশু কিশোর বয় বৃদ্ধ ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকসহ সাধারন মানুষদের পারাপার হতে হয়। বিশেষ করে রোগীদের চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময় চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয় নিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় খাল বেষ্টিত মিরপুর এলাকার বাসিন্দাদের। এ কারনে দীর্ঘদিন ধরে ওই খালের ওপর সেতু নির্মানের দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী।

গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে মিরপুরের এই ছাপড়া খালের ওপর ১ কোটি ১৪ লাখ দুইশ এক চল্লিশ টাকা ব্যায় নির্ধারন করে ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি গার্ডার সেতু নির্মান প্রকল্পের বরাদ্ধ হয়। এযাবৎ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। সিডিউল অনুযায়ী স্থান ঠিক থাকলেও অন্যত্র স্থানান্তর করতে উঠে পড়ে লেগেছে এলাকার কিছু মহল। অথচ যুগ যুগ ধরে সাকোঁ পেরিয়ে আসা-যাওয়া করছে সেখানকার প্রায় দেড়শ পরিবারের মানুষ। তিন পাশ জুড়ে প্রবাহমান ছাপড়া খালের কারনে প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে চাষাবাদ করতে বেগ পেতে হয় ওই এলাকার কৃষকদের। তাছাড়া মালামাল পরিবহন ও চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এসব পরিবারের লোকজন। দীর্ঘকাল ভূক্তভোগীদের প্রত্যাশিত সেতু বরাদ্ধ হলেও বর্তমানে তা বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত জায়গায় সেতু নির্মানের কথা থাকলেও অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার গুঞ্জন শুরু হলে স্থানীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়। এতে দীর্ঘ বছরের কাঙ্খিত সেতু থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে ডালবুগঞ্জ ও মিরপুরের এলাকাবাসী। পূর্ব নির্ধারন করা জায়গায় গার্ডার সেতু নির্মানের দাবি জানান স্থানীয়রা।

স্থানীদের দাবি, আমর খানের দুটি বাড়ি থাকলেও আমির খান এর বাড়ি সংলগ্ন ছাপড়া খাল একটাই। তিনি নতুন বাড়ি করলেও সেখানে এই নামে কোনো খাল নাই। তাছাড়া ছাপড়া খালের ওপর সেতু নির্মান করার লক্ষ্যে জায়গা নির্ধারন ও পরিমাপ করতে পূর্বের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাগণ বারবার ওই পয়েন্টেই আসতেন। এখন কেন অন্য স্থানে নেয়ার চিন্তা করছেন তা কেউ জানেন না। সিডিউল অনুযায়ী সেতু নির্মান করতে দাবি ওই এলাকার সকলের। তাছাড়া সেতু না থাকায় বিভিন্ন বণ্যাকালিন সময়ে সাইক্লোন শেল্টারে পৌছাতে দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেকে। পথিমধ্যে আনোয়ার নামে এক ব্যক্তি গত আম্ফান বন্যা মোকাবেলায় নিরাপদ স্থানে যাবার পথে সাঁকো দিয়ে পড়ে মারা যান। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে থাকে এই খালের সাঁকো পার হতে গিয়ে। তাই সিডিউল অনুযায়ী ব্যক্তি ও খালের নাম ঠিক রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ডালবুগঞ্জ ও মিরপুর এলাকার মানুষের যাতায়াত করাসহ কৃষি কাজে ব্যাপক উন্নতি হবে এমন প্রত্যাশা স্থানাীয়দের।

মিরপুর ফজলুল করিম ক্বেরাতুল ক্বুরআন হাফিজিয়া মাদরাসা শিক্ষক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি এপার মাদরাসায় চাকরী করি আর ডালবুগঞ্জের ওপার মসজিদে ইমামতি করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াইতে দশ বার খালের সাঁকো পার হওয়া লাগে। প্রাই পড়ে গিয়ে ব্যথা পাই। এই জায়গায় একটি ব্রীজের হইবে শুনছি এখন আবার শুনি অন্য জায়গায় লইয়া যাইবে। আমরাতো তাহলে অনেক বিপদে পড়মু।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য, মো. বাবুল গাজী বলেন, মিরপুর গ্রামের তিন পাশেই ছাপড়া খাল। এই যায়গায় যে সেতুর সেংশনের কথা শুনছি অতীব জরুরীভাবে তা দরকার। দুই পাশে অনেক মানুষজনের পারাপারে খুব কষ্ট হয়।

ঠিকাদার মো. আবদুল বারী জানান, আমি সিডিউল অনুযায়ী যেভাবে উল্লেখ আছে, সেভাবে সেই স্থানেই প্রকল্প নির্মান করবো। এর বাইরে করার ক্ষমতা আমার নাই। কেউ বললেও আমি তা করতে পারবো না।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোকসেদুল আলম বলেন, ডালবুগঞ্জ এলাকায় যে গার্ডার সেতু প্রকল্পের স্কীম করা হয়েছে এবং কোন জায়গায় থেকে করা হয়েছে তার সত্যতা যাচাই করে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে সিডিউল অনুযায়ী প্রকল্পের স্থান নির্ধারন করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement