নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পুরান ঢাকার চকবাজারে ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে মোগল সুবেদার শায়েস্তা খান নির্মাণ করেছিলেন শাহী মসজিদ। মুঘল আমলে ঢাকার প্রধান বাজার ছিল বাদশাহী বাজার। পরে নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ ১৭০২ সালে একটি আধুনিক বাজারে রূপ দেন। যা এখন চকবাজার নামে পরিচিত। তখন থেকেই প্রতি রমজানে এখানে বসতো ইফতারির বাজার। সেই থেকে পথচলা। প্রতিবছর এ মসজিদের সামনের চকবাজারে নানারকম ইফতারির নিয়ে বসে। সারা বছর অন্য কাজ করলেও রমজানের সময় এসে ইফতারি বিক্রি করেন অনেকেই। বর্তমানে চকের পাশাপাশি পুরান ঢাকার নবাবপুর, বংশাল, সিদ্দিকবাজার, গুলিস্তান, টিপু সুলতান রোড, ওয়ারী, লক্ষ্মীবাজার, ধোলাইখাল বাবুবাজার, কাপ্তানবাজার, চানখাঁর পুলসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বাহারি ইফতারি পাওয়া যায়।
চকের ইফতার বাজারের একটি জনপ্রিয় পদ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। এটা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী পদ। চকবাজারে ঢুকলেই শোনা যায়, ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গায় ভইরা লইয়া যায়। এ খাবারটি তৈরিতে প্রধানত ব্যবহৃত হয় খাসির মাংস। এর সঙ্গে আরো রয়েছে ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনামরিচ, ডাবলি, বুটের ডাল, মিষ্টিকুমড়াসহ নানা ধরনের মসলা নিয়ে ১০০ পদ। এই আইটেমের জন্যই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ছুটে আসেন চকবাজারে। পুরান ঢাকার এমন অনেক পরিবার আছে, যাদের এটি ছাড়া ইফতার পূর্ণতা পায় না। এর দাম প্রায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।ঢাকার শাহী খাবার ও মোগল ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে থাকা চকবাজারের ইফতার ঢাকার ইতিহাসের একটি অংশ হয়েই থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।