দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুর শহরের ক্ষেত্রীপাড়ায় দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাধর সংখ্যালঘুদের দখলে থাকা বৈধ সম্পত্তি ফেরত চাইছেন হতদরিদ্র দ্বীন ইসলাম। সমবার (১৯ আগষ্ট) বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকইউনিয়ন দিনাজপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈধ সম্পত্তিটি ফেরত চেয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হতদরিদ্র এই বালুবাড়ি নিবাসী দ্বীন ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দিনাজপুর সদর উপজেলা প্রাণনাথপুর মৌজার অন্তর্গত ক্ষেত্রীপাড়া মহল্লার বাস্তু, পুকুরপাড়, রাস্তা ও পুকুর সম্পত্তি রয়েছে- যা আমার বৈধ সম্পত্তি। এর জেএল নং-৬৩, খতিয়ান নং-১২৪৩ ও ১১৮৫, দাগ নং-২৪৪৭, ২৪৪৬, ২৭০৬ ও ২৭০৭। এতে জমি রয়েছে ৮ একরের অধিক। তিনি বলেন, আমার এই নিজস্ব সম্পত্তি কতিপয় ভুমিধস্যু আওয়ামী লীগের নামধারী কতিপয় সাংবাদিকমুখশধারী চিত্র ঘোষ শাহারিয়ারশহিদ হিরু বিগত সরকারের মদদে দখল করে রাখে। ওই ভুমিদস্যুরা আপনাদের সকলের পরিচিত। বর্তমানে ক্ষমতার পালাবদলে সম্পত্তিটি দখলে নিতে পারতাম কিন্তু আমি তা করিনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, সম্পত্তিটি আমার বৈধ হলেও তা দখলে রেখেছে কতিপয় হিন্দু জনগোষ্ঠী। তারা সেখানে অবৈধভাবে বাড়ী-ঘর, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সেগুলো আমি দখল করতে গেলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা হিসেবে জাহির করা হতো। সেজন্য তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজস্ব সম্পত্তি হলেও তা দখল করতে যায়নি। তাই তার সম্পত্তি আইন সম্মতভাবে ফেরত পেতে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বক্তব্যে তিনি আরও জানান, এই ৮ একরের অধিক জমির দখল নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলাগুলোতে দখলদাররা সম্পত্তিটি দেবত্তোর এস্টেটের বলে দাবি করে, আবার সরকার পক্ষও তা তাদের বলে দাবি করে। তবে আদালতে দুই পক্ষেরই দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এই সম্পত্তি ক্রয়কৃত মালিকানাধীন সম্পত্তি আর তার পক্ষে আদালতের পাঁচটি রায় রয়েছে বলে বক্তব্যে দাবি করেন। এছাড়াও আদালত এই সম্পত্তি নিয়ে দেবোত্তর এস্টেট ও বাংলাদেশ সরকারের উপর চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা এখনও বহান রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে তিনি তার বৈধ সম্পত্তি ফেরত পাননি। দ্বীন ইসলাম লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, তার সম্পত্তি এতদিন ধরে বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাধর ব্যক্তি কাঞ্চন ঘোষ, উত্তম কুমার, অরুণ সরকার, চিত্ত ঘোষ ও সত্য ঘোষের পৃষ্ঠপোষকতায় দখলে রেখেছেন পরেশ, হবেল, তালুয়া, দিলীপ, দীনেশ, শিরু, অলোক, জগদীশ, পুলন, সুবল, কালা চান, স্বপন, দুলাল, মনোজ, শংকর গং। এই পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে কেউ কেউ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) জোড়া খুনের আসামীও রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর ফলে তার বৈধ সম্পত্তি বেদখলই রয়ে যায়। তিনি বলেন, দখলদারদের উচ্ছেদ করে তার সম্পত্তি ফিরে পেতে এখন সময় এসেছে। আর এই সম্পত্তিটি ফিরে পেতে যে মামলা ও দরখাস্ত করা হয়েছে সবগুলোতে তার পক্ষে রায় এসেছে। এমনকি সালিশ মিটিং এ দখলদারদের দেবোত্তর এস্টেটের জায়গায় স্থানান্তরিত করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এরপরেও তা করা যায়নি। লিখিত বক্তব্যে দ্বীন ইসলাম বলেন, বর্তমানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে জনগণের আস্থার অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই অবস্থায় সে তার বৈধ সম্পত্তি আইনগতভাবে ফেরত পেতে দিনাজপুরসেনা ক্যাম্প, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সহযোগিতা কামনা করেছেন এই হতদরিদ্র ব্যক্তি।