মোঃ রুবেল ইসলাম রাব্বি,বরিশাল
বরিশাল নগরীর হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন আগামীকাল। প্রায় দুই দশক পর কর্মী সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দিপনা সৃষ্টি হয়েছে। বরিশালে সবশেষ বড় সমাবেশ হয়েছিল ২০০৫ সালে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরাচারী আচরণ ও দমন-পীড়নের কারণে এতদিন বড় ধরনের কোনো প্রকাশ্য কর্মসূচি করতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, এবারের কর্মী সম্মেলন হবে বরিশালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জমায়েত। সম্মেলন সফল করতে ইতিমধ্যে বরিশাল মহানগর ও জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নগরজুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ এবং পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ঈদগাহ মাঠের দক্ষিণ দিকে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বরিশালের একটি রেস্তোরায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনেকে কেন্দ্র করে জামায়াতের আমিরের বরিশাল আগমন উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে সম্মেলনে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করেছেন জামায়াতের নেতারা। সম্মেলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সম্মেলন ঘিরে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে। পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকের পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সম্মেলন ঘিরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের নিজস্ব ভলান্টিয়াররাও নিরাপত্তা রক্ষায় সহযোগিতা করবেন।
জামায়াতে ইসলামীর বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মু. বাবর জানান, ২১ জানুয়ারি দুপুর ২টায় কর্মী সম্মেলন শুরু হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এর মাধ্যমে তিনি বরিশালে প্রথম প্রকাশ্য জনসভায় অংশ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ২১ জানুয়ারি বরিশাল মহানগর ও জেলার সমন্বয়ে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও মহানগরে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী-রোকন আছেন। তাদের সকলকে উপস্থিত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি বরিশালবাসী অধির আগ্রহে আছেন জামায়াতে ইসলামীর আমিরের জনসমাবেশে যোগ দিতে। সাধারণত কর্মী সম্মেলন একটি ইনডোর কর্মসূচি। তবে আমাদের কর্মী সংখ্যা বেশি হওয়ায় হেমায়েতউদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে আয়োজন করা হয়েছে।
জহির উদ্দিন মু. বাবর বলেন, কর্মী সম্মেলনে বড় স্ক্রিনে দেখার ব্যবস্থা করা হবে যাতে কেউ মাঠে স্থান না পেলে বাইরে থেকেও যেন দেখতে পারেন। আমরা আশা করছি বরিশালের ইতিহাসে জামায়াতে ইসলামীর এই সম্মেলন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। কর্মী সম্মেলনের দিনে শহরে যেন যানজট না হয় এজন্য শহরের কাছাকাছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঠে গাড়িগুলো রাখা হবে। ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে। নগরবাসীর যেন ভোগান্তি না হয় এজন্য ট্রাফিক বিভাগের নির্দেশনায় আমরা চলতে চাই।
সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার বলেন, বরিশালে আমাদের শেষ বড় সমাবেশ হয়েছিল ২০০৫ সালে। এরপর দীর্ঘ সময় কোনো প্রকাশ্য অনুষ্ঠান হয়নি। এবার কর্মী সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীরা অত্যন্ত উজ্জীবিত। ঈদগাহ মাঠ ছাড়িয়ে গোটা নগরীই জনসমাবেশে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, কর্মী সম্মেলনে বরিশাল মহানগর ও জেলার সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। অন্য জেলা থেকে কোনো যানবাহন বা সদস্য অংশ নেবে না। জামায়াতের শৃঙ্খলা বিভাগ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।