মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
আগামীর বাংলাদেশকে তরুণদের তুলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর আমরা দফায় দফায় অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। কিন্তু সেই আন্দোলনের পরিসমাপ্তি আমরা ঘটাতে পারিনি। স্বৈরাচারকে আমরা তাড়াতে পারিনি, বিদায় করতে পারিনি। আমি গর্বিত আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করেছে। আমি আমাদের সন্তানদেরকে ভালবাসা উপহার দিচ্ছি। শ্রদ্ধ জ্ঞাপন করছি, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। জাতির পক্ষ থেকে তাদেরকে স্যালুট জানাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে তারা অসাধ্য সাধন করেছে। এরকম সন্তান পেয়ে জাতি গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আগামির বাংলাদেশ আমরা তাদের হাতেই তুলে দিবে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মো. ইয়ামির আলী, সহকারী সেক্রেটারি হারুনুর রশিদের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিেেশষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিুবুর রহমান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হবিগঞ্জ জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরার সদস্য কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরার সদস্য দেওয়ান সিরাজুল ইসলাম মতলিব ও মো: আবদুল মান্নান, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ফয়জুল কবির ময়ুন, হেফাজতে ইসলামীর জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবদুস সবুর, মৌলভীবাজার জেলার নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি শরিফ মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমদ খান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার শহর শাখার সভাপতি তারেক আজিজ, ছাত্রশিবিরের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি হাফেজ আলম হোসাইন, বড়লেখা উপজেলার সাবেক আমীর মো: কমর উদ্দিন, মৌলভীবাজার পৌর শাখার আমীর ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মাওলানা তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলা আমীর মো: ফখরুল ইসলাম, বড়লেখা উপজেলার আমীর মো: এমদাদুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলার আমীর আবুর রাইয়ান শাহীন, কুলাউড়া উপজেলার আমীর অধ্যাপক আব্দুল মুনতাজিম, জুড়ী উপজেলার আমীর আব্দুল হাই হেলাল, শ্রীমঙ্গল উপজেলার আমীর মাও. ইসমাঈল হোসেন, কমলগঞ্জ উপজেলা আমীর মো: মাসুক মিয়া।
এর আগে হাফেজ মাহবুবুর রহমানের অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কর্মী সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন জেলা মৌলভীবাজার সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদের শিল্পীগোষ্ঠী। ঘন কুয়াশা আর শীতের কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে হাজার হাজার কর্মী সমর্থক সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন। মানুষের ঢলে সম্মেলনস্থল উপচে আশপাশের রাস্তাঘাট মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। সকাল এগারটার দিকে কিছুটা রোদের দেখা মিললেও কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার মৌলভীবাজারের আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে উঠে। ডাক্তার শফিকুর রহমান বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠেন ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে।
দলের আমীর নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম নিজ জেলা মৌলভীবাজারে খোলা মাঠে কর্মী সমাবেশে ভাষণ দিলেন ডা. শফিকুর রহমান।
বক্তব্যের শুরুতেই জুলাই আন্দোলনের বীর সৈনিকদের একটি স্লোগান উচ্চারণ করে বলেন, ‘বুকের ভিতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর,। তাদের ক্ষোভটা ছিল সাড়ে ১৫টা বছর। এসময়টায় তারা জাতির ঘাড়ে বসে সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। দেশটাকে শ্মশান কিংবা গোরস্তানে পরিণত করেছিল। এরা মাঝে মাঝে বলতো দেশে নাকি অনাবিল শান্তি বিরাজ করছে। আমরা বলতাম শান্তি তোমরা কায়েম করেছো কবরের মতো। যেখান থেকে হাসি কিংবা কান্নার শব্দ শোনা যায় না। কবরস্থানে কোন মানুষ থাকে না। হাসি কান্নার আওয়াজ শোনা যায় না। ২৮ অক্টোবর তারা লাশের ওপর নর্দন করেছে। তখনই তারা জানান দিয়েছিল যে ক্ষমতায় এসে খুন-গুমের রাজ্য কায়েম করবে। আমরা সেদিন আমাদের বুকের কান্না বাংলাদেশের মানুষের কাছে হয়তো বা পৌঁছাতে পারিনি। এরপর পেছনে বোঝাপড়া করে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জগন্য সরকারে হাত ধরে করে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তারা জয়লাভ করেছিল। ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসে খুনের নেশা বাস্তবায়নের কর্মসূচি হাতে নেয়।
তিনি বলেন, প্রথমে তারা খুন করে সেনাবাহিনীর চৌকস ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে পিলখানায়। ২৫ এবং ২৬ ফেব্রæয়ারি। দ্ইু মাস না যেতেই তারা খুনের রাজত্ব কায়েম করে। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দেয়। বিডিআর বাহিনী ধ্বংস করে সেই বাহিনীর সাড়ে ১৭ হাজার সদস্যকে চাকুরীচ্যুত করলো। সাড়ে ৮ হাজারকে জেলে দিলো। জেলের ভেতর সাড়ে ৩শ’র অধিক মারাই গেল। আমাদের গর্বের বাহিনী ধ্বংস হলো। ক্ষমতায় যাওয়ার শেষ সিড়ি হিসেবে এদের ব্যবহার করে চক্রান্ত করে ধ্বংস করে দিলো। বাহিনীর নাম বদলে বিজিবি রাখা হয়েছে। আগে নাম ছিল বাংলাদেশ রাইফেলস। আর এখন নাম দিয়েছে বর্ডারের চৌকিদার। লগো বদলিয়েছে, ড্রেস বদলিয়েছে, নাম বদলিয়ে ফেলেছে। কারা হত্যাকারী ছিল জাতিকে জানতে দেওয়া হলো না। লুকোচুরি করা হলো। রাতের অন্ধকারে বিদ্যুতের আলো কেড়ে নিয়ে, অন্ধকার করে খুনিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো। একটা বিশেষ দেশের প্লেন কেন এসেছিল ঢাকায়? এরপর হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেল কিভাবে? তার জবাব স্বৈরাচারী সরকাররা না দিলেও একদিন তাদেরকে দিতে হবে। আমরা সেই হত্যাকাÐের বিচার চাই।
তিনি বলেন, এরপর শুরু হলো তাদের তান্ডব। তাদের প্রথম লক্ষ্যবস্তু করলো জামায়াতে ইসলামীকে; যারা পরিক্ষীত দেশপ্রেমিক। তারা তাদের সততায় দেশবাসীকে মুগ্ধ করেছিল। দক্ষতার সাক্ষর রেখেছিলেন। দায়িত্বের পরতে পরতে সেই সমস্ত নেতৃবৃন্দকে ঠাÐা মাথায়, মিথ্যা অভিযোগ সাজানো কোর্ট, পাতানো সাক্ষী এবং ব্রাসেলস থেকে রায় এনে সেই সমস্ত নেতৃবৃন্দকে খুন করা হলো, ফাঁসি দেওয়া হলো, কাউকে কাউকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হলো, জেলের ভেতর মৃত্যু করলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা তখন আমাদের বন্ধু সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠনকে বলেছিলাম, এটি জামায়াতের ওপর আঘাত নয়। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের এই বিশাল দেওয়াল ভেঙ্গে দিলে বাকীরা সবাই ভেসে যাবেন, কেউ টিকতে পারবেন না। আমাদের পাশে দাড়ান। ফ্যাসিজমকে সম্মিলিতভাবে আমরা মোকাবেলা করি। আমরা কথাগুলো বুঝাইতে পারি নাই। সবাই মিলে একসাথে সেই যুদ্ধটা করতে পারলাম না। তার পরের ইতিহাস আপনাদের সামনে পরিষ্কার। তারা আর কাউকে ছাড়লো না। এক এক করে সবাইকে ধরলো।
বিএনপিকে ধরলো, হেফাজককে ধরলো, আলেম ওলামাকে ধরলো, অন্যান্য দলকে ধরলো। কাউকে তারা ছাড় দিলো না। এমনকি এই যে, সাংবাদিক বন্ধুরা আজকে এসেছে নিউজ কাভার করতে; তাদেরকেও ধরলো। তাদেরকে খুন করলো, তাদেরকে আমাদের সাথে গুম করলো। তাদের আয়না ঘরে পাঠালো, কাউকে কাউকে ভারতের ওপাড়ে বর্ডারে নিয়ে ফেলে দিলো। এভাবে তারা সারাটা দেশকে নরকে পরিণত করেছিল।
তিনি উল্লেখ করেন, আজকে যুবকরা বলতেছে আমাদের ভোট চুরি করেছিল। তিনটা নির্বাচন আজ যাদের বয়স ৩০-৩২ বছর; তারা একটা ভোটও দিতে পারেনি। তাদের সমস্ত ভোটকে জেনোসাইড করেছিল, গণহত্যা করেছিল। ভোটের গণহত্যা। এদের নৈতিক সাহস ছিল না দেশে থাকার। এজন্য দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। পালাতে গিয়ে কারো কারো অবস্থা এমন হয়েছিল যে, রসিক সিলেটবাসী তাদের কলাপাতায় শুয়ে দিয়েছিল।
তাকে জিজ্ঞেস করেছে আপনি কে গো? বলে যে, আমি শামছুদ্দিন চৌধুরী। স্যার— আপনি কি কালোমানিক ? বলে জি জি কালো মানিক। আপনি কোথায় আছেন ? সম্ভবত ভারতে আছি। কয় না গো জাদু ——-আপনি যেতে পারেন নাই!! কি দুর্ভাগ্য সুপ্রীম কোর্টে অ্যাপিলিয়েট ডিভিশনের একজন বিচারপতি।
তিনি এতটাই দলবাজ ছিলেন; লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে ন্যায় বিচার করতে পারেননি। আসল বিচার হবে হাশরে। দুনিয়াতেও কিছু বিচার হয়ে যায়। এসমস্ত খুনি সন্ত্রাসী রাজনীতিবিদ নয়। এদের বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে। প্রত্যেকটা অন্যায় অপরাধের বিচার করতে হবে। জাতিকে এরা ৫৩ বছর বিভিন্ন কায়দায় ফ্যাসিজমের মাধ্যমে দ্বিধাবিভক্ত করে রেখেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি, মেজরিটি শক্তি, মাইনরেটি শক্তি, কতভাবে যে ভাগ করেছে এরা। কারণ একটা জাতিকে যখন টুকরা টুকরা করা যায়, তখন তাদের গোলাম বানানো সম্ভব। এরা ধরে নিয়েছিল তারা দেশের মালিক, আমরা সবাই ভাড়াটিয়া। হ্যাঁ মালিকরাই দেশে আছে ভাড়াটিয়ারা পালিয়ে গেছে।
তিনি ভারতের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিদেশী দেশকে বলতে চাই — আপনারা শান্তিতে থাকেন। আমাদেরকেও শান্তিতে থাকতে দেন। আপনাদের পাক ঘরে কি পাকাবেন আমরা জিজ্ঞেস করি না। আমাদের পাক ঘরে উকি মারার চেষ্টা করবেন না। নিজেরা আয়নায় চেহারা দেখুন। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সবক দিতে হবে না।
জামায়াতে ইসলামীর আমির উল্লেখ করেন, যেখানে আমাদের শীর্ষ ১১ নেতাকে খুন করা হয়েছে, সবগুলো অফিস তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে, আমাদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বেদিশা হয়ে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ পর্যন্ত করা হয়েছে। এতে যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বলেছি দেশ আমরা ভালবাসি, মানুষকে আমরা ভালবাসি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন চাইলে আমরা কিছু কিছু চাঁদাবাজি করতে পারতাম। কিছু দখল নিতে পারতাম। কিন্তু এটা আমাদের জন্য হারাম মনে করি। প্রিয় বাংলাদশে গড়তে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের আরও ধৈর্য্যরে পরিচয় দিতে হবে? দিতে পারবেন ধৈর্য্যরে পরিচয়? এসময় সবাই হাত তুলে সায় দেন। জামায়াতের আমীর বলেন, আমরা একটা সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। বৈষম্যকে নির্বাসনে পাঠাবো। আমরা মেধার স্বীকৃতি প্রদান করবো, পলিটক্রেসি নয় মেরিটক্রেসির ভিত্তিতে জাতি গঠন করবো। যুবকদেরকে শিক্ষা দিয়ে বেকারের হাত বাড়াবো না, যুবকদের হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করবো।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় কোন ভাল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয় নেই। কেন? মৌলভীবাজার কি অপরাধ করেছে? সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন এই জেলার কৃতি সন্তান একজন কৃতি অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি সারাদেশকে সমান চোখে দেখতেন। আগামিবার একনেকে যেন মৌলভীবাজারে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ দিয়ে অন্য কোন উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেই দাবি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মৌলভীবাজারে সবেচয়ে বেশি চা বাগান। রাষ্ট্রীয় যথাযথ পর্যবেক্ষণ না থাকায় চা শিল্প ধ্বংস হওয়ার পথে। মালিক পক্ষ চায়ের যথাযথ মূল্য পান না। শ্রমিকরাও পারিশ্রমিক পান না। তিনি নেতাকর্মীদের চারটি বিষয় তুলে ধরেন এর মধ্যে নিয়ত সহি করে জ্ঞানের রাজ্যে এগিয়ে গিয়ে সাহসী হয়ে কঠোর পরিশ্রম করার আহ্বান করেন। সব শেষ তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
এড. এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, এই দেশে আর কোন চক্রান্ত মাথা চারা দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না। তাদের আর কোন চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নেতাকর্মীদের ঐতিহাসিক এবং ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চক্রান্তকারীদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন বলেন, ছাত্র-জনতা এই দেশের অধিকাংশ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পেরেছিল বলেই ¯েøাগান তুলেছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ এবং বিপ্লব করে স্বৈরাচার তাড়িয়েছিল। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের পুরানো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশে নতুন ধারার রাজনীতি চালু করতে হবে। বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে হলে মানুষের আইন দিয়ে দেশ পরিচালনা করলে চলবে না। এর আগে যারা দেশ শাসন করেছিল তারা মানুষের আইন দ্বারা শাসন শোষণ করে দুর্নীতিকে প্রধান হাতিয়ার করে তুলেছিল। আমরা বলতে চাই এই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দেশের বেশিরভাগ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আল্লার আইন দ্বারা দেশ পরিচালনা করলে এদেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গত ৫৩ বছরে দেশের মানুষের সামনে ইসলামী অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সবকিছুর মডেল উপস্থাপন করেছে। আমরা বক্তৃতায় বিশ্বাসী নই। কাজে বিশ্বাসী।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে কোন পরাশক্তি দেশের প্রতি চোখ রাঙ্গাতে পারবে না। আর কোন ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলবে না। সবাই স্বাধীনভাবে তার কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। সমাবেশ শেষে জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান মৌলভীবাজার জেলার বিশিষ্টজন, সুধী ও পেশাজীবি সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন।