উত্তরের মহাসড়কে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় চালকের ক্ষেত্রে আহতের চেয়ে নিহতই বেশি

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ,  বগুড়াঃ

২০২৪ সালে মহাসড়কের শুধু বগুড়া জোনেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ম…ত্যু হয়েছে ১২০ জনের, এর মধ্যে চালক ৪৫ ও আরোহী রয়েছে ৭৫ জন। আবার এসব দূর্ঘটনায় চালক আহত হয়েছে ২২ ও আরোহী ১৫৭ জন। অর্থাৎ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালকের ক্ষেত্রে আহতের চেয়ে নিহতের সংখ্যাই বেশি। দূঘটনার কারন খুজতে গিয়ে গত কয়েক মাসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বিভিন্ন চিত্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে উঠতি বয়সী তর”নদের চালিত বাইকের দ্রুত গতি। মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, লুকিং গ্লাস খুলে রাখা, মাদকাসক্ত অবস্থায় বাইক চালানো, উল্টো পথে চালানো, রং ওভারটেকিং, দীর্ঘ পথের যাত্রা, একের অধিক আরোহী নেয়া, ফিটনেস বিহীন মোটরসাইকেল, ব্রেক জটিলতা, বাইলেন ব্যবহার না করা, সর” রাস্তা থেকে নিজের ইচ্ছেমতো মহাসড়কে ঢুকে পরাসহ আরো নানা কারন।

নিজের সন্তানের অহেতুক জেদ ও ইচ্ছে পুরণে অথ্যধুনিক প্রযুক্তি ও ফ্যাসানেবল নানা ধরনের বাইক কিনে দিয়ে তাদের উপর নজর না রাখাটাই বর্তমানে সড়ক ও মহাসড়কে বাইক দুর্ঘটনার মূল কারন। সড়ক ও মহাসড়কে প্রতিনিয়তই দেখা মেলে অসংখ্যা উঠতি বয়সী তরুনরা রংঢংয়ের গাড়ি নিয়ে পাল্লা-পাল্লিভাবে পুরো রাস্তা দখল করে সাপের মতো একেবেকে বাইকের রেসলিং। নেই মাথায় হেলমেট, নেই গাড়িতে লুকিং গ্লাস, আবার কোন কোন সময়ে এই বহরগুলো উল্টো পথেই ঢুকে পরে মহাসড়কে। এই সময়গুলোতে নিজেদের গাড়ির ঘষাতে পরে যাওয়া ও বসে থাকা আরোহী ছিটকে পরলে পেছনের দ্রুতগতরি গাড়ির চাপা এবং মুখোমুখি সংঘর্ষও ঘটে থাকে।

একটি বাইকে পরিবারের সকল সদস্য, অর্থাৎ স্ত্রী ও ছোট-ছোট দুই ও দুইয়ের অধিক সন্তান নিয়ে সড়ক-মহাসড়কে দ্রুত গতিতে বাইক চালানো বর্তমানে একধরনের ফ্যাসানে পরিনত হয়েছে। এসব গাড়িতে আবার নারীদেরকে বসানো হয় তেরছা দিকে, তাদের কোলেও থাকে শিশু সন্তান। এই চরম ঝুকিতে বাইক চালানোয় দুর্ঘটনার সংখ্যাও কম নয়। বিভিন্ন সময় বিশেষ করে বছরের দুটি ঈদে ঘরমুখো মানুষগুলো সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে কয়েকটি ব্যাগ ও পরিবার নিয়ে কয়েকশো কিলোমিটারের রাস্তা পারি দিয়ে থাকে।

বিগত সময়ে দেখা গেছে, যে বছর মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ছিল ওই বছর সড়ক দূর্ঘটনাও কম হয়েছে।

মাদকাসক্ত অবস্থায় বাইক চালানোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। উত্তরের বিভিন্নস্থান থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্যা মাদকসেবীরা, মাদকের আখরা খ্যাত হিলি বন্দরে গিয়ে মাদক সেবন শেষে বিশেষ কায়দায় ফেন্সিডিলের বোতল সাথে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যত্রতত্র বাইক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

ব্লাইড স্পট সর্ম্পর্কে ধারণা না থাকা এবং দ্রুতগতিতে ওভারটেকিং করতে গিয়ে ট্রাক ও দুরপাল্লার দ্রুতগামি বাসের নিচে পরেও মৃত্যুর সংখা বেরেই চলছে।

সচেতন মহলের দাবি, বাংলাদেশের রাস্তায় কি ধরনের গতির নির্দেশনা দেয়া রয়েছে সেটা অনুসরন করে বিভিন্ন কোম্পানির গাড়ি সিসি অনুযায়ী আমদানি করা এবং দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও আইন অনুযায়ী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেইসাথে সকল শ্রেণির মানুষ বিশেষ করে অভিভাবক মহলকে অত্যান্ত সচেত হওয়া ও সন্তানের প্রতি নজর রাখা।

এ বিষয়ে বগুড়া হাইওয়ে রিজিয়ন এর দেয়া তথ্যানুযায়ী, পুলিশের সতর্কতামূলন নানা কর্মসূছি ও অভিযান প্রতিনিয়ত চলমান রয়েছে। ২০২৪ সালে ৫ হাজার ৬৭০ টি মোটরসাইকেলে মামলা দেয়া হয়েছে। এছাড়া থ্রি হুইলার ৮,৯৫৯ ও অতিরিক্ত গতির জন্য আরোও ৪,০২৬টি গাড়িতে মামলা দেয়া হয়েছে।

বগুড়া হাইওয়ে রিজিয়ন এর পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনা এরাতে প্রথমত জনগনকে সচেতন হতে হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মহাসড়কে না ওঠা অর্থাৎ বাইলেন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া বিপরিত দিক থেকে আসা, হেলমেট ছাড়া না চলা ও নাম মাত্র হেলমেট ব্যবহার না করা, মোটর সাইকেলে তিনজন না ওঠা, মোটরসাইকেলগুলো সময়মতো মেইনটেনেস করা, দুরের পথ চলতে মোটরসাইকেল ব্যবহার না করা, তরুনদের হাতে মোটরসাইকেল না তুলে দেয়াসহ নানা অভিভাবকমহল সচেতন হলেও আমরা অনেকাংশে দুর্ঘটনা রোধ করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, আমরা হাইওয়ে পুলিশ সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি, পাশাপাশি জনগন যদি আমাদেরকে সহযোগিতা করে হাতলে আমরা একটি সুশৃঙ্খল রোড উপহার দিতে পারবো। এই কর্মকর্তা সর্বস্তরের মানুষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বর্তমানে উত্তরের সবগুলো সহাসড়কের সাথে ঢাকার যোগাযোগ অত্যন্ত ভালো অর্থাৎ সিক্সলেন রোডের কাজ প্রায় শেষ তাই ঝুকি নিয়ে মোটরসাইলে বাড়ি ফেরার চিন্তা বাদ দিয়ে দুরপাল্লার গাড়িযোগে বাড়ি এসে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন।

 

 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement