শহিদুল ইসলাম খোকন, গাইবান্ধা:
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে রাজস্ব খাতভুক্ত “অফিস সহায়ক ” পদে প্রতারণা ঘটনায় মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে ২২ জনকে আটক করে তাদের নামে মামলা করা হয়েছে।লিখিত পরীক্ষার খাতার লেখার সাথে তাদের নিজস্ব হাতের লেখার মিল পাওয়া যায়নি।প্রাথমিকভাবে তাদের হয়ে প্রক্সি ক্যান্ডিডেট দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দেওয়ান বলে সত্যতা স্বীকার করেন।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এই প্রতারণা ধরা পড়ার পরপরই জেলা প্রশাসন( রাজস্ব শাখা) কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের নামে মামলা দায়ের করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী( গাইবান্ধা সদর থানা) হাতে সোপর্দ করে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এই ঘটনার পেছনে একটি সুসংগঠিত সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে যারা পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে জালিয়াতি করতে সক্রিয়।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে যেভাবে বিষয়টি উঠে এসেছে, তাতে আমাদের ধারণা, এই জালিয়াতিতে বেশ কয়েকজন সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আমরা আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে।
জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্যে কঠোর নজরদারি এবং সঠিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ওপর আরও জোর দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ( ২৫ অক্টোবর) সকালে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার ৫৫টি শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে অফিস সহায়ক পদের লিখিত পরীক্ষা সদর উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ২২৬ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় পাস করে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। সকাল থেকেই পর্যায়ক্রমে তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল।
দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কিছু অসাধু ব্যক্তিরা প্রক্সি বা প্রতারক ব্যবহার করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করে আসছে। এটি এক ধরনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড, যা জনগণের আস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে, প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের ফলে জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তির সঞ্চার করেছে।