গোপালগঞ্জ সার্কেলের সহকারী কর কমিশনারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

নিসা আক্তার দিনা, গোপালগঞ্জ:

গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেল, কর অঞ্চল-৩ ঢাকা এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মনির হোসেনের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নিজ দপ্তরের নাম ভাঙিয়ে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইট ভাটা ও বাড়ি-গাড়ির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ ওঠেছে।

এবিষয়ে গোপালগঞ্জ ট্যাস্কেস বার এসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য আইনজীবীরা কর কমিশনার, কর সদর দপ্তর, জেলা প্রশাসক গোপালগঞ্জ, ও দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগের বর্ননা থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মনির হোসেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেলে যোগদান করেন। গোপালগঞ্জে যোগদান করেই বহিরাগত কিছু নারী ও পুরুষ দালালদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং তাদের মাধ্যমে কর দাতাদের আইনি সেবা নিতে নির্দেশ দেন। পরে তাঁদের মাধ্যমে বিভিন্ন করদাতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সরকারি কোষাগারে নামমাত্র কর জমা দিয়ে রাষ্ট্রকে ফাঁকি দিতে শুরু করেন। এছাড়াও তার নিজ দপ্তরের অফিস সহকারী ইয়াহিয়া মুন্সী, নৈশপ্রহরী সোহরাব হোসেন ও আউটসোর্সিং কর্মচারী মিরাজ হোসেন সহ অন্যান্য বহিরাগত দালালদের সাথে নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাজারের দোকান, ইট ভাটা, বাড়ির মালিক সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা আদায় করে ভাগবাটোয়ারা করে ভোগ করে আসছেন। এছাড়াও তিনি তার অফিস রুমে বহিরাগত সুন্দরী নারী দালালদের ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে কাজের নামে রঙ্গ তামাশা করেন। এতে সরকারি দপ্তরের ভাবমূর্তি ব্যপক ভাবে নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা গেছে, পূর্বে তিনি কিশোরগঞ্জ-১৪ সার্কেল কর অঞ্চল ময়মনসিংহ এ ইন্সপেক্টর পদে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। সেখানেও তিন প্রদর্শনে গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা উৎকোচ আদায় করতেন। একপর্যায়ে ব্যবসায়িদের অভিযোগের ভিত্তিতে কতৃপক্ষ তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে তিনি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে পদোন্নতি নিয়ে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার পদে গোপালগঞ্জ-৫০ সার্কেলে পদায়িত হন। গোপালগঞ্জে যোগদান করেই উৎকোচ আদায়ের রাজত্ব কায়েম করেছেন। একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, সহকারী কর কমিশনার মনির হোসেন ঘুষের টাকায় তার নিজ জেলা কুমিল্লায় নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এবিষয়ে দূর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান আমাদের কন্ঠকে বলেন, গোপালগঞ্জ ৫০ সার্কেল, কর অঞ্চল-৩ ঢাকা এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনারের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পত্রটি অনুমোদনে জন্য ঢাকা হেড অফিসে পাঠানো হবে, অনুমোদন পেলে আমরা তদন্ত শুরু করবো।

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা সহকারী কর কমিশনারের কার্যালয় গেলে কমিশনার মনির হোসেনের রুম ভিতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে অফিস সহকারী ইয়াহিয়া মুন্সীর মাধ্যমে খবর পাঠানো হলে ওই বন্ধ রুম থেকে দুজন নারী দালাল বেরিয়ে জান। পরে মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোন দোকান বা ইট ভাটায় চাঁদাবাজি করিনি। কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে মিটিং করে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করেছি। এটা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। এবিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেজুলেশন এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই অফিসের পূর্বের অনেক ফাইল মিসিং আছে। আমি সবকিছু আপডেট করার চেষ্টা করছি, এ কারনে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এই দপ্তরে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মনির হোসেন যোগদান করার পর এখন পর্যন্ত কোন মাসেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। গোপালগঞ্জ ৫০ সার্কেলে বর্তমানে ৭৬ হাজার টিন ধারি রয়েছে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement