ছেলের চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতালের লিফট থেকে পড়ে বাবার মৃত্যু

 

 

 

মো: জহিরুল ইসলাম, গাজীপুর:

 

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলে চিকিৎসা করাতে এসে লিফট থেকে পড়ে বাবার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জাহিদুল ইসলাম (৪০) এর বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায়। তিনি চার দিন বয়সী তার ছেলে শিশু সন্তান নিয়ে হাসপাতালের ১০ তলায় শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।

 

নিহতের স্বজন ও অন্যান্য রোগীর অভিযোগ, হাসপাতালটিতে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা চরম আকার ধারণ করেছে। লিফট পরিচালনার জন্য লিফটম্যান নিয়োগ থাকলেও তাদেরকে কখনোই পাওয়া যায় না। এর আগেও লিফট আটকে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। ঐ ঘটনায়ও কাউকে কোন শাস্তি পেতে হয়নি। ফলে এখানে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। ওই লিফটটি নাকি নষ্ট ছিল, কিন্তু লিফটের সামনে কোন সতর্কবার্তা বা লিফটমানও ছিল না। এই লিফটিতে গত কয়েকদিন ধরে সমস্যা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি এবং কাউকে সর্তকও করেনি। তাদের দাবী যদি লিফটি নষ্ট হওয়ার কারণে বন্ধ থাকত বা লিফটম্যান উপস্থিত থাকতো তাহলে হয়ত দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।

 

হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আইয়ুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লিফটের গ্রাউন্ড ফ্লোর  থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। লিফটের সমস্যা এটা সবাইকে সর্তক করা উচিত ছিল আগে থেকে। তবে এই লিফট গত কয়েকদিন ধরে সমস্যা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি এবং কাউকে সর্তকও করেনি। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও লিফট ম্যান উভয়ই দায়ী।

 

হাসপাতালের জরুর বিভাগের চিকিৎসক মঞ্জুর মোর্শের বলেন, আমরা শুনতে পাই লিফটে একজন  পড়ে গেছে। পরে লোকজন লিফট হতে একজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন। পরে লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তাজউদ্দীন হাসপাতালের হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, লিফট থেকে পড়ে একজন মারা গেছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা জানতে পেরেছি লিফটি সচল ছিল না, কিভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তদন্ত করে দেখা হবে। লিফট রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ও গণপূর্ত বিভাগের। গণপূর্ত বিভাগের দায়িত্বহীনতার কারণে বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনায় গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলো তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *