মোঃআবু কাওছার মিঠু, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সাফল্যদের গল্প শুনতে চায় অনেকে। অনেকে আবার তাদের পথে হেটে সফল হতে চায়। এমন এক কৃতি ও সফল তরুণী চিকিৎসক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের বানিয়াদী এলাকার তরুণী জান্নাতুল ফেরদৌস স্বপ্না।ছোটবেলা থেকেই তার মনে স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। চিকিৎসক হতে গিয়ে লেখাপড়ায় শিক্ষার্থী হিসাবে বেশ সফলতা অর্জন করছেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস স্বপ্না বানিয়াদী গ্রামের মরহুম সুরজ্জামানের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে শিক্ষা জীবনে তিনি খুব মেধাবী ছিলেন। তিনি মুড়াপাড়া পাইলট স্কুল থেকে এসএসসি ও ডেমরা ডিএমআরসি থেকে এইচএসসি সুনামের সঙ্গে পাশ করেন। পরে তিনি চায়নার হারবিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। সেখানে পাঁচ বছরের কোর্সের দশ সেমিস্টারের মধ্যে মেধাবী হিসাবে তিন বার স্কলার্সশীপ অর্জন করেন। ২০২২সালের এমবিবিএস কোর্স সম্পূর্ণ করে দেশে ফিরেন।
২০২৩ সালে লাইসেন্স পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে তিনি উত্তীর্ণ হন এবং ঢাকার বারডেম হাসপাতাল থেকে এক বছর মেয়াদী ইন্টার্নশিপ সম্পূর্ণ করেন। ২০২৪সালে তিনি গাইনি বিভাগের এফসিপিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাধারণ গরিব দু:খী মানুষের পাশে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন।
তার চাচাতো ভাই মুড়াপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, স্বপ্না ছোট থাকতেই মেধাবী। পরিশ্রমী। বুদ্ধিমত্তায় অতুলনীয়। মানুষের সেবা করতেই স্বপ্না চিকিৎসক হয়েছেন। কৃতী শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বপ্না সেরা। কেননা, স্কুলজীবনের শুরু থেকেই সে তাঁর সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। হাসপাতালের মধ্যে সেরা অর্জনটিও তাঁরই ঝুলিতে। স্বপ্না শিক্ষিত ও স্বচ্ছল পরিবারের জন্ম হয়েছিলো বলেই পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে।
জান্নাতুল ফেরদৌস স্বপ্না বলেন, আজকের এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে আমার মা-বাবা ও চাচাতো ভাই কামাল হোসেনের সহযোগিতার ফলেই। শিক্ষকদের কাছ থেকে তিনি অনেক উৎসাহ ও সহযোগিতা পেয়েছেন। এমন ঈর্ষণীয় সাফল্যের জন্যে কোন কোচিং সেন্টারে যেতে হয়নি স্বপ্নাকে। পড়ালেখায় মা তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন। চাচাতো ভাই কামাল হোসেন প্রায়ই তাকে গল্প শোনাতেন কেনো পড়ালেখা এতো গুরুত্বপূর্ণ।
স্বপ্নার পরামর্শ আমরা যে যেখানেই যাই না কেনো, আমাদের কাজ হলো নিজেদের সেরা চেষ্টাটাই করে যাওয়া। তার ইচ্ছে গরীবদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। দেশের বাইরে আর পড়াশোনা শেষ করে অতিসম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। নিয়মানুবর্তিতার কারনেই তার এই অর্জন বলে জানিয়েছেন।
জীবনে ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই, বিজ্ঞানী মাদাম কুরির এই আপ্তবাক্য দ্বারা অনুপ্রণিত হয়ে স্বপ্না চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল লাভ করেন।
স্বপ্না আরো বলেন, আমি যেখানেই যাই না কেনো, মন-প্রাণ দিয়ে দেশের সেবা করতে চাই। তিনি বলেন, শিক্ষাজীবনে সাফল্যের প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সাহস, অধ্যবসায় ও ধৈর্য্যের। তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করি, নিজের উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র সনদ জমানো থেকে দৃষ্টিটা সরানো প্রয়োজন।