ঝিনাইদহে গ্রামীন সড়কে ভাঙ্গা কালভার্ট দিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে

মোঃ মহিউদ্দীন,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গ্রামীন সড়কে কালভার্ট ভেঙ্গে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অন্তত ৮ গ্রামের শিক্ষার্থীসহ হাজারো  মানুষের। প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে  ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ছালাভরা-পন্নাতলা বাজার হতে রামনগর গ্রামীন সড়কের কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই। বিশেষ করে কৃষকের উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এলাকায় রয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

সরোজমিনে দেখা যায়, পন্নাতলা বাজার হতে রামনগর গ্রামের প্রবেশ মুখে গ্রামীন সড়কের কালভার্টটি ভাঙ্গা। ভাঙ্গা অংশে দেওয়া হয়েছে লাল কাপড়ের সতর্কতা সংকেত, রাখা হয়েছে খোলামেলা। আর সেখান দিয়ে প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলছে পন্যবাহী অটোভ্যান, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল, করিমন, ভ্যান, ইজিবাইক, নছিমনসহ নানা ধরনের যানবাহনও শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। আকাশের ভারী বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য এই স্থানে কালভার্ট আকারের ছোট ব্রীজ নির্মাণ করা হয় সরকারি ভাবে। এ সড়ক দিয়ে অন্তত ৮ গ্রামের জনগণ জেলা ও উপজেলায় চলাচল করে।

এছাড়া রয়েছে আমিন উদ্দিন ও জহর আলী ডিগ্রী কলেজ রামনগর, রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়,পন্নাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়,পন্নাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরপুর দাখিল মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ রয়েছে হাফেজিয়া মাদরাসা। সড়কের কালভার্ট ভেঙ্গে গিয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এরি ফলে মহারাজপুর ও সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিপদজনক এই কালভার্টের বিশাল গর্তে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। কালভার্টটির পাটাতনের অর্ধেক অংশের ঢালাই ধসে গিয়ে শুধু রডগুলো ভেসে উঠেছে। দেখা দিয়েছে বিশাল গর্ত। বাকি যেটুকু আছে তাও যে কোনো মুহূর্তেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। কালভার্টটি সড়ক থেকে একটু উঁচুতে হওয়ার কারণে দ্রুতগামী যে কোনো যানবাহনকে সহসাই গর্তের মুখে এসে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিপদজনক এই কালভার্টের কারণে জরুরী সেবা অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গ্রামের ভেতরে প্রবেশে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া হাটবাজারে কৃষিপণ্য সরবরাহ করা, হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াত কিংবা অন্য কাজে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রতিদিন এই রাস্তায় কয়েকশ অটোরিকশা ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীসহ আসা-যাওয়া করে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই কালভার্টের ওপর দিয়ে যাতায়াত কালে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে  প্রানঘাতী কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এখানে একটি নতুন কালভার্ট মেরামতের দাবি করেন স্থানীয়রা। কালভাটের দুই পাশের মাটি ও ক্রমান্বয়ে ধসে যাওয়ার কারনে বেশি সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার ভয় থাকে চালকদের। দীর্ঘদিনেও মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় সরকার প্রকেীশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এই সড়কে প্রতিদিন ছোট বড় শত শত যানবাহন চলাচল করে থাকে। কালভার্টটি ভেঙ্গে থাকায় দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করছে বড় যানবাহন। সেতুতে গর্ত থাকার কারণে বড় কোনো গাড়ি চলাচল করে না। এ অবস্থায় পণ্য পরিবহন করতে পারেন না তারা। কেউ অসুস্থ হলেও অ্যাম্বুলেন্স না আসায় রোগীকে হাসপাতালে নিতেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। এই সড়কটি কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে থাকে। প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে থাকে এই সড়ক দিয়ে। কালভার্টটি ভাঙা থাকায় দুর্ভোগে রয়েছে এলাকার মানুষের বিশেষ  করে কৃষকের উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকায় রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাফিজিয়া মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দুটি ইউনিয়নের জনসাধারন এ সড়ক দিয়ে চলাচলের এক মাত্র ভরসা। আর সেখান দিয়ে প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলছেন শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ।

নূরুল ইসলাম নামের এক পথচারীরা জানান, সাধারণ মানুষের চলাচলের ভাঙ্গা কালভার্টটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আমরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছি। কালভার্টের পাশের একাংশের ঢালাই ভেঙ্গে বিশাল আকার ধারণ করে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে অপরিচিত লোকজন ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় বেশি দুঘর্টনা শিকার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যও সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না বলে জানান ভুক্তভোগিরা। কালভার্টটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে একটু একটু করে গর্তের সৃষ্টি হয়। তবুও ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ছোট ছোট যানবাহনে চলাচল করে। কিন্তু বর্তমানে গর্তটি বিশাল আকার ধারণ করায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গর্তে দেওয়া হয়েছে গাছেন ডালে লাল কাপড়ের নিশানা।

ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, গ্রামীন সড়কের কালভার্ট ভেঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে এ বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যর কথা বিবেচনা করে সংস্কারের জন্য এলজিইডি ঢাকা অফিসে চাহিদা পাঠিয়েছি। চাহিদা আশা মাত্র সংস্কার করা হবে। এলজিইডির ঐ কর্মকর্তা বলছে মানুষের চলাচলের জন্য দ্রুত কিভাবে কাজ করা যায় সেটি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *