মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন পিরোজপুরের নান্না শিকদার  

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

খেলাফত হোসেন খসরু, পিরোজপুর:

‎পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়ে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি ভান্ডারিয়া উপজেলার পশ্চিম পশারীবুনিয়া গ্রামের আজাহার আলী শিকদারের পুত্র। নান্না শিকদারকে ২০০২ সালের আগস্ট মাসের ২ তারিখ মুক্তিযুদ্ধের ৯ নং সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ রাজাকার দাবি করে একটি প্রত্যয়ন প্রদান করেন। যেখানে জিয়া উদ্দিন আহমেদ স্পষ্টভাবে তাকে রাজাকার দাবি করেন।

এছাড়াও ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রশাসন ৮৪ জন রাজাকারের তালিকা তৈরি করেন যে তালিকায় অভিযুক্ত নান্না শিকদারের পিতা আজাহার আলী রয়েছেন। এছাড়াও নান্না শিকদার পৈত্রিক সূত্রে ১৩ কাঠা জমির মালিক হওয়ার কথা থাকলেও এলাকায় তার হয়েছে ৮০০ কাঠা জমি। অভিযোগ আছে এসব জমি তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় লুট করা টাকা, স্বর্ণালংকার থেকে তৈরি করেছেন। একই গ্রামের মিরাজ শিকদার এসব অভিযোগ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

‎‎অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী মিরাজ শিকদার মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দায়ের করা অভিযোগে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার মুক্তিযোদ্ধা না হওয়ার স্বপক্ষে তথ্য প্রমাণসহ ৫ টি যুক্তি উপস্থাপন করেন। যেখানে তিনি দাবি করেন হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং-০৬০৫০৫০৬৪, সে মুক্তিযোদ্ধা নয় প্রকৃতপক্ষে রাজাকার এবং এ বিষয়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার (সেক্টর-৯) মেজর জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ২০০২ সালের ২ আগস্ট একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন, হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার ১৯৭১ সনে রাজবিহারী ডাক্তার বাড়ী থেকে ৬৫,০০০/= টাকা ও ৪০ ভরি স্বর্ণ লুট করে। এ বিষয়ে বাবুল হালদার ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি দরখাস্ত করেন। পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি তারিখে ৮৪ জন রাজাকার এর তালিকা করে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করেন। উক্ত তালিকায় ৬০নং নামটি নান্না, পিতা- আজহার আলী, ১৯৭১ সনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজবিহারী ডাক্তার বাড়ীতে ০৭ জনকে হত্যা করে রাজাকারা এবং ১৯৭২ সালের ২ এপ্রিল ভান্ডারিয়া থানায় মামলা হয়, মামলা নং-১, ধারা-১৪৭/৪৪৮/৩৮০/৩৭৯/৪৩৬/৩০২/৩৪ যেখানে আসামী ১৯ জন। নান্নার আপন বড় ভাই মানিক শিকদার ১০ নং আসামী। মামলাটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আছে।

অভিযোগকারী মিরাজ শিকদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হত্যা, লুট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেও নান্না শিকদার মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। তিনি দিব্যি মুক্তিযোদ্ধাদের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা নন তার যথেষ্ট প্রমাণ থাকায় আমি তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত শেষে নান্না শিকদারের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল চাইছি।

‎মিরাজ শিকদার আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলে অভিযোগের পর আমাকে ২ বার মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলে ডাকা হয় আমার কাছে টাকাও চাওয়া হয় তখন। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে পিরোজপুরে তৎকালীন ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাক্ষীদের পূর্ণ সাক্ষ্য না নিয়ে মনগড়া সাক্ষ্য লিখে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করে। এ সময় আমাকেও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য বলেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নান্না শিকদারকে ফোন করলে তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement