বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
গ্রামের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সরকার চালু করেছে কমিউনিটি ক্লিনিক। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে একেবারে নিজের গ্রামের মধ্যেই। মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা পরামর্শসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে এসব ক্লিনিকে।
প্রতিদিন অর্ধ শতাধিক মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকে আসছেন সাধারণ চিকিৎসা নিতে। এখানে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ওষুধ। বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের যত্নে ক্লিনিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এ ছাড়া টিকাদান কার্যক্রম, ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ, পুষ্টি পরামর্শ, পরিবার পরিকল্পনা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা—এসব সেবাও দেওয়া হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে।
সরকারি উদ্যোগের ফলে গ্রামের মানুষ এখন আর ছোটখাটো অসুখের জন্য শহরের হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছে না। একজন রোগী বলেন, “আগে চিকিৎসার জন্য অনেক দূরে যেতে হতো, এখন গ্রামের মধ্যেই সেবা পাচ্ছি।”
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় শিশুদের নিয়মিত টিকা দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে শিশুমৃত্যুর হার কমেছে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন ওষুধের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি আছে এবং ক্লিনিকে জনবলের অভাবও রয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, আরও চিকিৎসক নিয়োগ এবং ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে কমিউনিটি ক্লিনিক আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কমিউনিটি ক্লিনিক উন্নয়নের জন্য বাজেট বৃদ্ধি ও নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক এখন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবার প্রধান নির্ভরতার জায়গা হয়ে উঠেছে। তবে ঔষধে স্বল্পতার চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে পারলে এটি হবে একটি মডেল সেবা কেন্দ্র, যা দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।