হারুন-অর-রশিদ বাবু, রংপুর:
রংপুরে নিজেকে অসহায় দাবি করে, আশ্রিত হয়ে একই বাড়ি থেকে ৪ শিশুকে অপহরণকালে জনতার হাতে আটক হয়ে পুলিশের জালে বন্দী বাংলাদেশের সংঘবদ্ধ শিশু পাচারকারী চক্রের অন্যতম নারী সদস্য আদুরী বেগম (৩৫)। পুলিশ বলছে ওই নারী সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রেস সদস্য। উদ্ধার চার শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত ওই চার শিশু একে অপরের চাচাতো-জেঠাতো ভাইবোন। তাদেরকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক হয়ে এখন পুলিশের জালে বন্দি আছে ওই নারী।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০, টার দিকে রংপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শিশু চারটিকে উদ্ধার এবং ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কনফারেন্স রুমে ব্রিফিংয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) নগরীর তপোধন এলাকার আশিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে অসহায় দাবি করে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আদুরী বেগমকে আশ্রয় দেন তিনি। শুক্রবার (২৮ মার্চ) ইফতারের পর কৌশলে ওই বাড়ির মমিনুরের পুত্র ইসমাইল (৭) ও কন্যা মিনু (১২) আকিফুল ইসলামের কন্যা আখিমনি (১১) এবং মোঃ মকবুল এর পুত্র রিফাত (৮) কে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
শিশুদের অভিভাবকরা চাচাতো-জেঠাতে ভাই। তারা যৌথ বাড়িতে বসবাস করে।
একই বাড়ি থেকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি রংপুরসহ দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। মুহুর্তেই বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে পুলিশকে জানায় পরিবার।
এরইমধ্যে নগরীর সকল চেকপোস্ট এবং বাসস্ট্যান্ড ও স্টেশন এলাকায় নজরদারি বাড়ায় পুলিশ। মহানগর পুলিশ কমিশনার জানান, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে স্টেশন এলাকায় জনতা দেখতে পায় চারটি শিশু নিয়ে টানাহেচড়া করছে এক নারী। সন্দেহ হলে তাকে আটক করে সেখানে থাকা রেলওয়ে পুলিশকে জানায়। রেলওয়ে পুলিশ শিশু চারটিকে উদ্ধার এবং ওই নারীকে আটক করে মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, সাথে সাথে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে স্ব-স্ব অভিভাবকদের কাছে শিশুদের হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা আদুরী বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে সে একটি সংঘবদ্ধ অপহরণ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধেও যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
ইসমাইলের পিতা মমিনুর রহমান জানান, ইফতারের পর হঠাৎ দেখি আমাদের বাড়ির ৪ জন ছেলে মেয়ে নাই। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ উদ্ধার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।