রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে কোন্দল নিরসনে কেন্দ্রীয় নেতাকে দায়িত্ব

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

রাজশাহী ব্যুরোঃ

 

৫ আগস্টের পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির কোন্দল ক্রমেই ব্যাপক আকার ধারণ করছে। এর আগে সবাই একসঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও গত কয়েকদিন ধরে পৃথক কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে নগরীতে। এতে কোন্দল প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। মহানগর বিএনপি দুটি ভাগে বিভিক্ত হয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করছে। দলের একটি অংশ অবস্থান নিয়েছেন সাবেক মেয়র ও চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর দিকে। আরেকটি অংশ অবস্থান নিয়েছেন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বস্থানীয় নেতাদের দিকে। ফলে রাজশাহী নগরীতে একসঙ্গে আর কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারছে বিএনপি। তবে জটিলতা নিরসনে এরই মধ্যে চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামকে দায়িত্ব দিয়েছে বিএনপি। তিনি ঢাকা থেকে রাজশাহীতে এসে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রে প্রতিবেদন দেওয়ার পরে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও বিভক্তি ঠেকাতে আগামী ১৬ নভেম্বর রাজশাহীতে এসে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস।

 

রাজশাহী মহানগর বিএনপির একটি অংশের দাবি, রাজশাহী মহানগর বিএনপির ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সম্প্রতি। এ কমিটিতে ঠাঁই পাননি অনেক ত্যাগী নেতা। এ কারণে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নাই। তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন।

 

আরেক পক্ষের দাবি, যাঁরা দলের নিবেদিত প্রাণ তাঁদেরকেই কমিটিতে রাখা হয়েছে। এখন দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে একটি পক্ষ আলাদা কর্মসূচি পালন করছে। সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলাদা কর্মসূচি পালিত হতে দেখা গেছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের। একটি অংশ সাবেক মেয়র মিজানর রহমান মিনুকে নিয়ে এবং আরেকটি অংশ আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে দিবসটি পৃথকভাবে পালন করে। এ নিয়ে নানা গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে রাজশাহী বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে।

 

দলীয় সূত্র মতে, জাতীয়তাবাদি মুক্তিযোদ্ধা দল রাজশাহীর উদ্যোগে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভা, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের আয়োজন করা হয়েছিল নগরীর বড় মসজিদের সামনে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মেয়র ও চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। এছাড়াও ছিলেন মহানগর যুবদলের সাবেক সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান শরিফ, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান প্রমুখ। একই সময়ে আলাদা কর্মসূচি পালিত হয় বড় মসজিদ চত্তর থেকে মাত্র দুইশ গজ উত্তরে নগরীর ভূবনমোহন পার্ক চত্তরে। এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ প্রমুখ।

 

দলীয় সূত্র মতে, রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বন্দ্বটা দীর্ঘদিনের তবে। গত তিন-চার বছর ধরে দ্বন্দ্ব ভুলে নেতাকর্মীরা একসঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক দমন-নিপীড়নের মধ্যেও রাজশাহী মহানগরীতে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে জোরতালে। মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যলয় ঘিরেই মূলত নানা কর্মসূচি পালিত হত। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর নিজেদের মধ্যে আবারও দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বিশেষ করে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলাদা কর্মসূচি পালন নিয়ে নানা সমিকরণ হতে থাকে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে। মূলত সাবেক মেয়র ও দলের চেয়ার পার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর অনুসারীরা একটি পক্ষ এবং আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি-সদস্য সচিব মিলে আরেকটি পক্ষে অবস্থান করছেন।

 

রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা বলেন, ‘দলের অনেক ত্যাগী নেতাকে আহ্বায়ক কমিটি থেকে বাদ রাখা হয়েছে। অনেকেই সক্রিয় না, তাদেরকে পদে বসানো হয়েছে। এ নিয়ে কিছুটা মতবিরোধ চলছে। তবে দলের স্বার্থে আমরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছি। যারা নেতৃত্ব দিতে পারেন, তাদের সঙ্গে তৃণমূলের কর্মীরা আছেন। এ কারণে আমরা আমাদের মতো করে কর্মসূচি পালন করেছি। এতে হাজার হাজার নেতাকর্মী যোগ দিচ্ছেন। দলও চাঙ্গা হচ্ছে।

 

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, ‘গণতন্ত্রে নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকবে। এটাই গণতন্ত্রের অন্যতম শক্তি। তবে আমরা রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা অনক শক্তিশালী। সে কারণে পৃথক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সবাই যে একটি পক্ষের সঙ্গে থাকবে তা না।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *