রাজশাহী ব্যুরো :
বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিবকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা সম্পর্কে দুই ভাই। ঘটনার পর তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছে।
এ দুই কর্মকর্তা হলেন- উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম এবং সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল করিম। জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে একজন সেবাগ্রহীতার সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেসব সিদ্ধান্ত পাল্টে দেওয়ার জন্যই সোমবার দুপুরে বহিরাগতদের নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে যান তিনি।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, দুপুরে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমসহ ১০-১৫ জন ব্যক্তি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অলীউল আলমের কক্ষে ঢোকেন। তাদের মধ্যে আলোচনার একপর্যায়ে বোর্ড চেয়ারম্যান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় দরজার সামনে তাকে শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর বোর্ড চেয়ারম্যান সচিব হুমায়ুন কবিরের কক্ষের সামনে যান। সচিবও ওই সময় বের হন। এ সময় সচিবকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এছাড়া চেয়ারম্যান ও সচিবকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন বহিরাগতরা।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিম একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজনকে নিয়ে বোর্ডে যান। তিনি তাদের সামনে অভিযোগ তোলেন, চেয়ারম্যান ও সচিব দুর্নীতি করেছেন। আর অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরে চেয়ারম্যান কাগজপত্র বের করে দেখান, তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। বরং, জাহিদুর রহমানেরই অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারপরও বোর্ডে চেয়ারম্যান ও সচিবকে লাঞ্ছিত করা হলে পুলিশ যায়। সেনাবাহিনীর একটি দলও আসে। এরপর বহিরাগতরা চলে যান।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. অলীউল আলম বলেন, তাদের শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং বহিরাগতদের নিয়ে এসে বোর্ডে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির অভিযোগে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া দুই ভাইসহ ৩০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে জাহিদুর রহিমের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
নগরের রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, বোর্ডে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে।