নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে কদমতলী থানার সাবেক ওসি বর্তমান ডিএমপির সহাকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) (পেট্রোল- খিলগাঁও জোন) কাজী ওয়াজেদ আলীর এক আবেগঘন স্ট্যাটাস।তিনি রাহেলা বেগমের সংগ্রামী জীবন নিয়ে লিখেছিলেন।
তার ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
রাহেলা বেগম। আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ। দারিদ্র্যতা ওনাকে পরাজিত করতে পারেনি। জুরাইন সেতু মার্কেটের সামনের ফাঁকা জায়গায় বাচ্চাদের খেলনার অস্থায়ী দোকান দিয়েছেন। নিজেই ব্যবসাটি পরিচালনা করেন। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, ঠান্ডা, গরমের মধ্যেই ভিজে পুড়ে অনাবিল প্রশান্তি নিয়ে দোকানদারি করছেন। জীবন যুদ্ধে পরাজয়কে ঘৃনা করেন, কথা শুনে মনে হল। তাইতো থেকেও না থাকা স্বামীর কৃপার জন্য অপেক্ষা না করে খুশি মনেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জীবিকার সন্ধানে। কোন ক্লান্তি নেই, মুখে হাসি লেগেই থাকে সবসময়। দেখা হলেই আমাদের খোঁজ খবর নেন, কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন।
স্বামী নিজ দায়িত্বে চলে গিয়ে অপর স্ত্রী নিয়ে অন্যত্র থাকেন। ধৈর্য্যশীল এই মানুষটির স্বামীর বিরুদ্ধেও তেমন কোন অভিযোগ নেই। নিজের একমাত্র মেয়েটা বরিশালে থাকায় ছোট ছেলেটাকে নিয়ে তিনি আলমবাগে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তেমন পুঁজি নেই, বেচা-বিক্রিও কোনরকম। তবুও ভেংগে না পড়ে এটুকুর মধ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিশালতা থাকলেও বড় মনের কারনে তা বোঝা যায় না। এইতো ক’দিন আগেও শীতবস্ত্র ক্রয় করে শীতার্তদের মাঝে বিতরনের জন্য ১০০০/(একহাজার) টাকা দিয়ে সহযোগীতা করেছেন।
ওদিকে গেলেই বড় হৃদয়ের এই মানুষটার সাথে কথা হয়। আমাকে দেখলেই এগিয়ে আসেন। অমায়িক এই মানুষটার আচরনে মুগ্ধ না হয়ে পারা মুশকিল। গতকাল সেতু মার্কেটে ঢোকার সময় উনি আমাদের দেখেন। কিছুক্ষন পর বের হয়ে দেখি, আমাদের জন্য কিছু সিংগাড়া হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। অসাধারন এই মানুষটার আবদার প্রত্যাখান করা যায়নি। সিংগাড়া আগেও খেয়েছি, কিন্তু অসম্ভব ভালো মানুষটার দেয়া এই সিংগাড়াগুলোর যে এত স্বাদ, তা আগে কখনও বুঝিনি!