সর্জন পদ্ধতি’তে উচ্চ ফলনশীল জি-৯ জাতের কলা চাষে সফলতা পেয়েছেন বক্কর

মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি:

পাইকগাছায় উচ্চ ফলনশীল জি-৯ কলা চাষে সফলতা অর্জন করেছেন কৃষক বক্কর। তিনি  আধুনিক ‘সর্জন পদ্ধতি’তে প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল জি-৯ জাতের কলা চাষে সফল হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় সর্জন পদ্ধতিতে ফল ও সবজি চাষ প্রদর্শনী খামারটি থেকে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে কলা হার্ভেস্টিং।

খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের রেজাকপুর গ্রামের মৃত কওছার আলী মোড়লের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিকী। তিনি চলতি ২০২৩-২৪ কৃষি মৌসুমে গ্রামের এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে চাষ করেছেন উচ্চ ফলনশীল জি-৯ কলা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার দাশের তত্ত্বাবধানে ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও নিরীক্ষণে গড়ে উঠেছে বক্করের স্বপ্নের কলাবাগান।

কলাচাষি আবু বক্কর জানান, ইতোমধ্যে তিনি কলার হার্ভেস্ট (কাটতে) শুরু করেছেন। প্রতি কাদিতে ২২০-২৪০টি। কোনো কোনো কাদিতে তারও বেশি পরিমাণ কলা এসেছে। যার ওজন ২৫-৩০ কেজি পর্যন্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন। প্রতি মণ কলা তিনি ১২ শ’ থেকে ১৪ শ’ টাকায় বিক্রি করছেন। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত ও বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে নেয়া মাত্রই তার কলা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় চারা, জৈব ও রাসায়নিক সার, নেটসহ আনুষঙ্গিক সহযোগিতা নিয়ে প্রায় ছয় মাস আগে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে তিনি কলার বাগান করেন। তার এক বিঘা জমিতে প্রতি ৫-৬ ফুট দূরত্বে প্রায় পাঁচশ’ চারা রোপণ করেন। ৪-৫ মাসের মাথায় মোচা বা ফুল আসা শুরু হয়। এরপর ৬-৭ মাসের মাথায় হার্ভেস্টিংয়ের (কর্তন) উপযোগী হয়ে ওঠে।

সাগর কলার মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রঙের কলা পাকলে হলুদ রঙ ধারণ করে। খেতেও অন্য জাতের কলার চেয়ে ব্যতিক্রম ও আলাদা স্বাদের। প্রতিটি গাছের গোড়ায় ৪-৫টি করে চারা গজিয়েছে। এসব চারা প্রতিটি তিনি ৫০ টাকা করে বিক্রি করতে পারছেন, যা অতিরিক্ত আয় হিসেবে এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার দাশ বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় সর্জন পদ্ধতিতে ফল ও সবজি চাষে এ উপজেলায় বেশ কিছু প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি ও পরিবেশ জি-৯ কলা চাষের উপযোগী, যা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। আগামীতে এ অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ জাতের কলার আবাদ করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।

ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, লবণাক্ত অঞ্চল পাইকগাছায় জি-৯ কলা চাষের সফলতায় তিনি এ প্রকল্প নিয়ে আশার আলো দেখছেন। আগামীতে ব্যাপকভিত্তিতে চাষাবাদের জন্য আমাদের সহযোগিতাকে আরো সম্প্রসারিত করা হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *