সাতক্ষীরায় একটি বাড়িতে শাহাদাতের নেতৃত্বে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটার যুগিপুকুরিয়া গ্রামে দুর্ধর্ষ লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গত ৬ আগষ্ট বিকালে ঐ গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র মাওলানা আঃ গফুরের বাড়িতে এই ভাংচুর লুটতরাজের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠান থেকে বসত ঘরের ভিতর পর্যন্ত লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ার সেই দিনের চিত্র। এঘটনায় ভুক্তভোগী মাঃ আঃ গফুর বলেন,সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো- অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এ যুগিপুকুরিয়া এলাকার অনেকে ডিপিএস সঞ্চয় করেন।সেখানে আমারও প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ডিপিএস সঞ্চয় রয়েছে। আমরা সকলে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি অফিসে টাকা জমা দিতাম।সকলের সঞ্চয় বইয়ে ঐ অফিসের ম্যানেজার স্বাক্ষর করে টাকা জমা নিতেন। অনেকে ডিপিএসের মেয়াদ শেষে লাভসহ টাকাও ফেরত পেয়েছে।

গত কয়েক বছর আগে ঐ প্রতিষ্ঠানটি আমার সঞ্চয়কৃত টাকা ও বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঞ্চয়ের টাকা না দিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তারা পালিয়ে যায়। এঘটনায় আমার এলাকার অনেক গ্রাহক বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছে। যাহা এখনো চলমান।কিন্তু হঠাৎ গত ৬/৮/২৪ তারিখ মঙ্গলবার কোন কারন ছাড়াই স্হানীয় শাহাদাতের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি বাহিনী আমার বাড়ির ভিতর অনধিকার প্রবেশ করে। আমার স্ত্রী ও সন্তানকে বেধড়ক মারপিট করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেই। আমার স্ত্রীকে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। আমার কলেজ পড়ুয়া ছেলেটকে মেরে ফেলার জন্য মারধর করতে থাকে। এসময় তারা আমার স্ত্রী্র নিকট থেকে একটি সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেয়। তখন আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী অনুনয় বিনয় করে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে। এসময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। সন্ত্রাসীস্টাইলে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে রেখে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে বিকাল ৫ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ভাংচুর করতে থাকে তারা। আলমারি,খাট, সোকেস,ফ্রিজসহ সমস্ত আসবাবপত্র ভাংচুর করে। আলমারি থেকে মুল্যবান কাগজ পত্র সহ দামি দামি জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। খাটের জাজিমের নিচে থাকা কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার নগত টাকা সহ আমার স্ত্রীর ব্যবহৃত ৫ ভরি সোনার গহনাসহ জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায় তারা। চাউলের ড্রামের চাউল সহ হলুদ পর্যন্ত নিয়ে যায় তারা। যে সব সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ি হামলা করেছে তারা প্রায় সবাই আমার প্রতিবেশী।

তিনি বলেন, কোম্পানির লেনদেনকে কেন্দ্র করে যুগিপুকুরিয়া গ্রামের শাহাদাত এর নেতৃত্বে একই এলাকার আঃ আজিজের পুত্র নূর ইসলাম, শাহাদাতের পুত্র আশরাফুল, মোসলেমের পুত্র আবু তালেব, আজিজুল, রজব আলির পুত্র মনিরুল,মোছাঃ শিউলী, ইসমাইলের স্ত্রী মাসুরা, সিরাজুল ইসলামের পত্র ইকবল, ওয়াজেদ আলীর পু্ত্র শওকত, আঃ ওহাবের পুত্র হাবিবুল্লাহ, হাফিজুর,আবুল কাশেম এর পুত্র নাজিম, আকছেদ এর কন্যা মোছাঃ আবেদা, হান্নানের স্ত্রী কোহিনূর, মোঃ সাচার, মোদাচ্ছের, মোছাঃ ফারহানা, মধুর বউ,আলামিনের বউ,শরিফুলের বউ,ফাতেমা,মোফাজ্জেল পিতা মোঃ অবেদ আলী, আঃ আজিজ,অম্বুল, কাশেম, শাহাদাত,মোসলেম,রজব আলী, সবজী শাহাদাত, ইসমাইল,অজেদ আলী,আঃ অহাব ,আবুল কাশেম, আকছেদ আলী,অজিয়ার, মনিরুল,সিরাজুল, ফাতেমা, শরিফুল, মোফাজ্জেলসহ ৪০/৫০ জন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তারা বলছে তুই আমাদের কিছুই করতে পারবি না। আমরা তোর বংশ নির্বংশ করে ফেলব। আমি সহ আমার পরিবার এখন প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কোন পুলিশ,প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে না। আপনারা আমাদের রক্ষা করেন বলে কাঁদতে থাকেন তিনি।

আব্দুল গফুর আরও বলেন, আমি কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নই। আমার নিকট তারা কোন টাকা পাবে না। তারা তো টাকা পাবে কোম্পানির কাছে, এব্যাপারে আদালতে তারা মামলাও করেছে। আমার প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে তারা। এ অবস্থায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এঘটনায় দ্রুত সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের অফিসার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *