পাইকগাছায় ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারী শ্রমিকরা

মোঃ রফিকুল ইসলাম খান, পাইকগাছা (খুলনা )প্রতিনিধি:

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পুরুষের  পাশাপাশি নারীরা এগিয়ে গেলেও  পাইকগাছার  নারীরা আজও অবহেলিত। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীর নারী শ্রমিকরা তাদের অধিকার ও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

পাইকগাছা এলাকায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরা মাছের ঘের, নদীতে রেণু আহরণ,  নদীতে মাছ ধরা, রাজমিস্ত্রির সহকারী, মাটিকাটা, গ্রামীণ রাস্তানির্মাণ ও সংস্কার, এবং  কৃষি কাজ করে থাকেন । তবে এসব নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ গরীব হওয়ায় পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কাজ করতে হয়। না হলে তাদের সংসার চলে না।

পাইকগাছার কাঠামারীর  কর্মজীবী  নারী লতা মন্ডল  বলেন, ‘আমি ঘেরে শেওলা তোলা,কাঁকড়া ধরা. বেড়িবাঁধা সহ বিভিন্ন কাজ করি। পুরুষের সাথে একই কাজ করলেও টাকা পায় পুরুষের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। মজুরি  বাড়ানোর কথা বললে কাজে নিতে চাই না মালিকরা, সংসার চালানোর তাগিদে তাই বাধ্য কাজ করতে হয়।

দেলুটি ইউনিয়নের রহিমা বেগম বলেন, এই অঞ্চলে অধিকাংশ নারীরা কাঁকড়া খামারে মৎস্য ঘেরে, নদীতে রেণু আহরণ,  নদীতে মাছ ধরা, রাস্তা সংস্কার ও কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের বাড়ির কাজ করতে হয় পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে সমান বা তার চেয়ে বেশি কাজ করতে হয়। এরপরও পুরুষ যে মজুরি পায়, নারী পায় তার অর্ধেক। বিভিন্ন  কাজে একজন পুরুষ ৪০০ টাকা পেলে নারীকে দেওয়া হয় ২৫০ টাকা। নারীরা আজও  মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। একজন পুরুষের অর্ধেক মজুরি পান একজন নারী। নারী-পুরুষ সবাই শ্রমিক কেন তাদের আলাদা করা হয়। সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

কপিলমুনির লাকী আক্তার জানান, এই এলাকার অধিকাংশ নারী তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা বিষয়ে অধিকাংশই নারী জানেন না। অনেকে জানলেও কাজ হারানোর ভয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না ।

পাইকগাছা  উপজেলা পরিষদের সাবেক  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপিকা ঢালী  বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই নারীরা অবহেলিত এবং বঞ্চিত। মুখে সবাই নারীর অধিকার নিয়ে বলে কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় উল্টো। নারীর অধিকারের কথা  মুখে যতই বলি না কেন পুরুষশাসিত সমাজে এখনও পরিবর্তন আসেনি।

কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, সরকার নারী অধিকার ও মজুরি বৈষম্য কমাতে আইন করেছে। সর্বনিম্ন মজুরি হবে ৪০০ টাকা। এখানে নারী-পুরুষ কোনও কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এর ফলে নারীর মজুরি বৈষম্য দূর হবে। নারীরা যেন তাদের নায্য মজুরি পায় সে বিষয়ে মালিক ও শ্রমিকদের অরো দ্বায়িত্বশীল হতে হবে ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *