নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা জুবায়ের ও সাদপন্থি সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে চলা সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৩ মুসল্লির নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় উভয় পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত ভোররাত ৩টা থেকে ইজতেমা মাঠ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে এ সংঘর্ষের শুরু হয় বলে জানা গেছে।
জুবায়েরপন্থি তাবলিগ জামাত (শুয়ারি নেজাম)-এর মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন– কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৭০), রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০)। মাওলানা সাদের অনুসারী বগুড়ার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম (৬৫)।
আহতরা হলেন– ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮), গাজীপুরের আব্দুল হান্নান (৬০), টঙ্গীর জহুরুল ইসলাম (৩৮), প্রান্ত (৫৫), গোপালগঞ্জের আরিফ (৩৪), সাভারের ফয়সাল (২৮), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), নরসিংদীর তরিকুল (৪২), উকিল মিয়া (৫৮), চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪), কেরানীগঞ্জের খোরশেদ আলম (৫০), বেলাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), নোয়াখালী সদরের আনোয়ার (৭৬), সাতক্ষীরার ফোরকান আহমেদ (৩৫)। বাকিদের নাম জানা যায়নি। তাদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ভোররাত ৩টার দিকে আমরা খবর পাই, সারা দেশ থেকে সাদপন্থি মুসল্লিরা টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশে বেলাল মসজিদে অবস্থান করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের লোকজন ধারালো অস্ত্র-শস্ত্রসহ তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ময়দানের বিদেশি গেট ভেঙে ময়দানের ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে ৩ জন মুসল্লি নিহত ও শতাধিক আহত হন।
অপরদিকে, সাদপন্থি মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা এখন ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে আছি। জুবায়ের অনুসারীদের আক্রমণে আমাদের এক ভাই শহীদ হয়েছেন।’ ময়দানে অনেক জুবায়েরপন্থি মুসল্লি চাকু ও ছোরাসহ আটক হচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র নার্স হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘টঙ্গী হাসপাতালে একজন এবং ঢাকায় নেওয়ার পথে এক জন মুসল্লি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে আরো একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিব ইস্কান্দার জানান, এ ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। সকাল থেকে ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনী, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।