শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রেমিকা তার সহকর্মীর হাত ধরে হাঁটায়, প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল পোশাক শ্রমিক সৈকত ইসলাম (২০) নামের এক যুবকের। এ ঘটনায় পুলিশ প্রেমিক আপেল মাহমুদ আমিনুরকে (২৪) গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৯টায় শ্রীপুর পৌরসভার পশ্চিম ভাংনাহাটি বৈরাগীরচালা-মাধখলা সড়কের ইব্রাহিমের বড়ীর পাশে এ ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) নয়ন কর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সৈকত ইসলাম বগুড়ার জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাওড়াখালী গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। সে ২১ দিন আগে পশ্চিম ভাংনাহাটি এলাকায় মোশারফের বাড়ীতে ভাড়া থেকে স্থানীয় এমএইচসি অ্যাপরেলস (পোশাক কারখানা) কোয়ালিটি অপারেটর পদে চাকরি করতো।
গ্রেফতার আপেল মাহমুদ আমিনুর বগুড়ার জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা (টেপাবাড়ী) গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে। সে প্রায় দুই মাস আগে চাকরি করার উদ্দেশ্যে পশ্চিম ভাংনাহাটি এলাকায় এসে স্থানীয় রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে।
ঘাতক আপেল মাহমুদ আমিনুর জানান, প্রায় ৫ মাস আগে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চরদুলক্ষ্যা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের মেয়ে রোজিনা আক্তার সামিয়ার সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা শ্রীপুর পৌরসভার পশ্চিম ভাংনাহাটি এলাকায় এসে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। এর মধ্যে প্রেমিকা রোজিনা আক্তার সামিয়া স্থানীয় এমএইচসি অ্যাপরেলস (পোশাক কারখানা) কোয়ালিটি অপারেটর পদে চাকরি নেয়। চাকরি করার সুবাদে একে অপরের সহকর্মী হওয়ায় তারা একসাথে কারখানায় আসা যাওয়া করতো। তাদের একসাথে কারখানায় আসা যাওয়া প্রেমিক আপেল মাহমুদ আমিনুর মেনে নিতে পারেনি। প্রায়ই তাদেরকে ফলো করে। মঙ্গলবার রাত ৯টায় কারখানা ছুটি হলে তারা একে অপরের হাত ধরে বৈরাগীরচালা-মাধখলা সড়ক দিয়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিল। বিষয়টি প্রেমিক আপেল মাহমুদ দেখে ফেললে সৈকত তাকে জিজ্ঞাসা করে আমাদেরকে ফলো করছো কেন? এসময় প্রেমিক আপেল মাহমুদ সামিয়ার সহকর্মী সৈকতকে গলায়, পিঠে ও বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। পরে রোজিনা আক্তার সামিয়া চিৎকার দিলে প্রেমিক আপেল মাহমুদ দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামী আপেল মাহমুদ আমিনুরকে পৌরসভার ২নং সিএন্ডবি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাঈয়িদা ইমরোজ বলেন, সৈকত ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনেরা। তার গলায়, পিঠে ও বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, এ ঘটনায় নিহতের কাকা রেজাউল করিম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।