ছেলেকে বিদায় দিতে গিয়ে আগুনে চিরবিদায় বাবার

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

তরিকুল ইসলাম, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ

রাজধানীর শাহজাদপুরে বহুতল ভবন মজুমদার ভিলায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত শহীদুল ইসলাম মিরন জমাদ্দার তার ছেলেকে সৌদি পাঠাতে বিমানে তুলে দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি মঙ্গলবার সকালে লাশ হয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। নিহত শহীদুল ইসলাম মিরন জমাদ্দারের মৃতদেহ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার দারুলহুদা গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পরিবারে শোকের মাতম চলছে।

জনাযায়, অনেক স্বপ্ন নিয়ে শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল একমাত্র ছেলে মুনিম জমাদ্দারের। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ফ্লাইট। ছেলেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে সোমবার সকালেই গ্রামের বাড়ি ভান্ডারিয়া থেকে ঢাকায় যান বাবা মিরন জমাদ্দার (৬০)। ওঠেন শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেল সৌদিয়ায়। গত সোমবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শাহজাদপুরের আবাসিক হোটেল ভবনের দোতলায় বিউটি পার্লারে আগুন লাগে। ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে হোটেলে। আগুনে ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে না পেরে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শহীদুল ইসলাম এর শ্যালক হিরন তালুকদার জানান, ভাগ্নে মুনিম তালুকদারকে বিমানে তুলে দিতে তারা তিনজন মিলে রবিবার ঢাকায় যান। তারা তিনজন ওই ভবনের চতুর্থ তলায় সৌদিয়া নামে একটি হোটেলে অবস্থান ওঠেন। মুনিম ও তার মামা হিরন সোমবার সকালে হোটেল থেকে বেরিয়ে সকালের নাস্তা আনতে যাওয়ার পর ভবনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে । এসময় তারা হোটেলে অবস্থানরত মিরন জমাদ্দারকে ফোন দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেন। এসময় মিরন জানান  ‘আমি বাঁচার কোনও পথ পাচ্ছি না, চারদিকে ধোঁয়া, দম বন্ধ হয়ে আসছে কান্না ভেজা কণ্ঠে বলার পরই ফোন কেটে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে চারতলার ৪০২ কক্ষ নম্বর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।এসময় আরও তিনজনের লাশও উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, ধোঁয়ার তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা ছাদে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ওই সময় ছাদের দরজা তালাবদ্ধ ছিল। এ কারনে তার মৃত্যু ঘটে। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত বৃদ্ধ মিরন জমাদ্দার এর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

স্থানীয় সহকারি যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, ছেলে বিমানে তুলে দিতে গিয়ে লাশ হয়ে বাবার বাড়ি ফিরে আসা খুবই মর্মান্তিক । নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী গত তিনবছর বছর আগে আগে মারা যায়। একমাত্র ছেলের কর্মসংস্থানের জন্য বহু কষ্টে তাকে সৌদিআরব পাঠাতে বিমানে তুলে দিতে তিনি গিয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারটি এখন অসহায় অবস্থায় পড়েছে।

এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন আরাফাত রানা বলেন, এটি একটি দু:খজনক ঘটনা। পরিবারটি এমন অসহায় অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

 

 

 

 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement