সদ্যঘোষিত জাতীয় শ্রমিক লীগের জেলা কমিটিকে ভুয়া বলে দাবি করেছেন আহ্বায়ক কমিটি, বরগুনা 

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

বরগুনা প্রতিনিধিঃ

বরগুনায় সদ্যঘোষিত জাতীয় শ্রমিক লীগের জেলা কমিটিকে অগঠনতান্ত্রিক ও ভুয়া ঘোষণা করে ঐ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ। জাতীয় শ্রমিক লীগের বরগুনা জেলা আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আঃ হালিম মোল্লা ও সদস্য সচিব রাশেদ আহম্মেদ বশিরের নেতৃত্বে মঙ্গলবার বেলা ১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শ্রমিক লীগ বরগুনা জেলা শাখার আহবায়ক আঃ হালিম মোল্লা লিখিত বক্তব্য বলেন, দেশের সর্বদক্ষিণের জেলা বরগুনায় নেই মিল কারখানা, নেই বড় ধরণের ইন্ডাস্ট্রিজ, রয়েছে রিক্সা, অটো-ইজি বাইক, নির্মাণ শ্রমিক, জেলে শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষ। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন জাতীয় শ্রমিকলীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শ্রমজীবি মেহনতি মানুষের পক্ষে তথা শ্রমবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নে শপথাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। গত ০৮ জুলাই বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সুপারিশে ১৩ জুলাই জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ওভাররাইটিং করা একটি প্যাডে বরগুনা জেলা শ্রমিকলীগের একটি কমিটি অনুমোদন করে। উক্ত কমিটিতে মনিরুজ্জামান জামাল কে সভাপতি ও মোঃ মাহিদুল আলম তপু মাতুববারকে সাধারণ সম্পাদক করে ও জেলা যুবলীগের সহ সভাপতিকে উক্ত কমিটিতে সহ সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করে। যা গঠনতন্ত্র পরীপন্থি। বরগুনা জেলা শ্রমিকলীগ, সকল উপজেলা শ্রমিকলীগ ও সকল পৌর শ্রমিকলীগসহ সকল মুজিব আদর্শের নেতা-কর্মীগণ সদ্য ঘোষিত এ অঘটন তান্ত্রিক ও ভুয়া কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানাই।

আঃ হালিম মোল্লা আরো জানান, জেলা শ্রমিক লীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির তথাকথিত সভাপতি জামাল জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক শ্রম সম্পাদক ও বর্তমান প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। যা অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা নির্বাচিত হতে পারেন না। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্রের ৬৩নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, আওয়ামীলীগের কোন সদস্য সংগঠনের একাধিক স্তরে কর্মকর্তা থাকিতে পারিবেন না। যদি তিনি এক স্তরে কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় অন্য কোনো স্তরে নির্বাচন করিতে চান, তবে তিনি পূর্বের কর্মকর্তার পদ হইতে পদত্যাগ না করিয়া পরবর্তী স্তরের কর্মকর্তা পদে প্রতিদ্বন্দিতা করিতে পারিবেন না। এই মনিরুজ্জামান জামালের বাবা বরগুনা জেলা স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে চাকুরী করছিলেন। ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করার প্রয়োজনে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মরহুম আঃ কাশেম বিএসসির দেয়া কাঠের ঘরখানাসহ ঐ জমি ও ঘরসহ প্রতি মাসে ৪শ’ টাকা ভাড়া চুক্তিতে থাকতে ছিলেন। অতপর ঐ ঘর ও জমি নিজেদের নামে ডিসিআর করে নেয়। তাদের দূর্নীতি ও অনিয়মের অন্ত নেই। সুপারিশকারী এ্যাড, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তিনি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সকল সহযোগী সংগঠনের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বসহ সংগঠন পরিপন্থি কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যথাযথ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু কিছু দিন পরে উক্ত কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন হয়েছে দুবছর পূর্বে, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে ৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। দীর্ঘ বছর কালক্ষেপন করে বরগুনা ০১ আসনের সংসদ সদস্য জননেতা গোলাম সরোয়ার টুকু এমপি কে ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিখিত ঘোষণা করেন, অথচ এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উক্ত ঘোষণাকে বাতিল করে ৩নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি লিপিবদ্ধ করেন, যা বরগুনার জনমতে ব্যাপক নিন্দা ঝড় উঠছে। এমনিভাবে সরকারি জমি দখলসহ সাংগঠনিক কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্থ করছেন।

২০০৭ সালে ১/১১ এর সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শেষ হাসিনা বলে আখ্যা দেন এবং ঐ ১/১’র সময় জননেত্রী শেখ হাসিনার একদফা মুক্তি আন্দোলনে আমি আবদুল হালিম মোল্লা আহবায়ক জাতীয় শ্রমিকলীগ প্রথম গ্রেফতারসহ নির্যাতনের শিকার হই। নেত্রী আমাকে তৎকালীণ সময় চিকিৎসা করার জন্য অনুদান প্রদান করেন। সকল মুজিব আদর্শের বাক্তিবর্গ এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদের এমপি মহোদয়দের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।জাতীয় শ্রমিকলীগ বরগুনা জেলা শাখা সুষ্ঠু ও সুন্দররূপে মেহনতী শ্রমজীবি মানুষের অধিকার আদায়সহ জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সকল নির্দেশনা পালনসহ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার শপথ গ্রহণ করছি। জাতীয় শ্রমিকলীগের বিতর্কিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহিদুল আলম তপু মাতুব্বার জামাত বিএনপির এজেন্ট বটে। তার চাচাতো ভাই মোঃ নাজমুল আহসান দুলাল মাতুকবার কর্নেল ফারুক ও কর্ণেল রশিদের ফ্রীডম পার্টি থেকে কুঠার মার্কায় নির্বাচন করেছিলেন ও ভাই স্বপন মাতুব্বর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি কখনই মুজিব আদর্শের সংগঠনের মধ্যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা শ্রমিকলীগের রাজনীতির সাথে রাজপথে কখনও সম্পৃক্ত ছিলনা।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শ্রমিক লীগ বরগুনা জেলা শাখার আহবায়ক আঃ হালিম মোল্লা আরও বলেন, দেশ যখন কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগ কর্মী সবুজকে হত্যা, শত শত সরকারী-বেসকারী গাড়ী অগ্নিদগ্ধ-ভাংচুর, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী রক্তে রঞ্জিত, সাধারণ জনগণ সহ শ্রমিক জনতায় জানমালের অনিশ্চিত ঠিক তখনি বরগুনা জেলা শ্রমিকলীগের সম্মেলন ছাড়া কমিটি প্রদান করেন, যা প্রকৃত শ্রমিকলীগ সংগঠনের মধ্যে এক দ্বিধাদয়-ক্ষোভ প্রকাশ পায়। তাই বরগুনার আপামর শ্রমিক জনতার পক্ষ থেকে উক্ত অপ্রত্যাশিত কমিটিকে নিন্দাসহ কমিটি বাতিল করে ত্যাগী ও শ্রমিকবান্ধব নেতাদের অর্ন্তভূক্ত করে নতুন কমিটি গঠন করার দাবি জানাই। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শ্রমিক লীগ বরগুনা জেলা শাখার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *