রেজাউল করিম খান, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জ-ঢাকা, চলাচলকারী সিরাজগঞ্জ শহর থেকে রেলপথে ঢাকা যাবার একমাত্র সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি দীর্ঘ ৩ মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে নতুন রূপে চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুতি নেবার নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (পাকশী) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিম) এর পক্ষে ডেপুটি চীফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট (পশ্চিম) মোছাঃ হাসিনা খাতুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে ট্রেন পুনরায় চালুকরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (পাকশী) শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১৫ নভেম্বর থেকে আগের নিয়মেই সিরাজগঞ্জ ও ঢাকার মধ্যে চলাচল করবে। এই সময়ের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজগঞ্জ বাজার রেলওয়ে স্টেশনে কিছু নতুন যন্ত্রাংশ যুক্ত ও সরঞ্জামগুলো আংশিক মেরামত করা হবে। তবে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন সম্পুর্ন ঠিক করতে আরেকটু সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, আগে বাজার স্টেশন থেকে টিকিট অনলাইন ছিলনা। বাজার স্টেশনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ট্রেনের সব টিকিট পুড়ে গেছে। এমতাবস্থায় ১৫ তারিখ থেকে চলাচল শুরু করতে যাওয়া সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের টিকিট এখন থেকে অনলাইনে পাওয়া যাবে। আমরা চেষ্টা করছি যতো দ্রুত সম্ভব শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশনও পরিপূর্ণভাবে চালু করতে।
স্টেশন দুটি মেরামত ও ট্রেন চালুর দাবিতে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বারকলিপি প্রদান, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু। পুনরায় এই ট্রেন চালুর মূল বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দানকারী হিসেবে তাকেই দেখছেন সিরাজগঞ্জ জেলা বাসী। এতে সহযোগিতা পরামর্শ প্রদান করেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ।
এ ব্যাপারে সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই রেলওয়ের সচিব, জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের সচিব সাইফুল্লাহ পান্না,ইকোনমিক জোনের পরিচালক মনোয়ার হোসেন ও সিরাজগঞ্জের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষসহ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। আমি সর্বোচ্চ কৃতজ্ঞতা জানাই সিরাজগঞ্জে কর্মরত সকল গণমাধ্যমকর্মীদের। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতোনা।
তিনি বলেন, আমি ট্রেন চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে মানববন্ধন করেছি, স্মারকলিপি দিয়েছি। সচিবের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছি। অবশেষে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হতে যাচ্ছে, এই অর্জন সিরাজগঞ্জবাসীর। তবে আমি দাবি করেছিলাম, ট্রেনে এসি বগি সংযুক্ত করতে হবে এবং এক্সপ্রেস ট্রেন লোকালের মতো না চলে এক্সপ্রেসের মতোই চলবে। আমার আরও দাবি থাকবে, যমুনা রেলসেতু চালু হবার পরে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলো যেন সিরাজগঞ্জ শহর ছুয়ে চলাচল করে। এতে শিল্পাঞ্চলে পরিনত হতে যাওয়া সিরাজগঞ্জের মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন যমুনা সেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত শহীদ এম. মনসুর আলী স্টেশন দুটি ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে স্টেশন দুটির কার্যক্রম এবং সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ করে দেয় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এরপর থেকে স্টেশন দুটি মেরামত ও ট্রেন পুনরায় চালুর দাবিতে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বারকলিপি প্রদান,সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু। এতে সহযোগিতা করেন সিরাজগঞ্জের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।