দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান সীতাকুন্ড-সন্দ্বীপ ফেরি চলাচল শুরু

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন
Advertisement

 

বঙ্গোপসাগরের জলরাশিঘেরা প্রায় ৭৫০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলা। সীতাকুণ্ড উপকুল থেকে জলপথে প্রায় ১৭ কি.মি. দূরের এ উপজেলার মানুষ দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করে আসছে। স্পীড বোট, ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা পারাপার করত। গর্ভবতী মহিলা বা মুমূর্ষু রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে আনার ক্ষেত্রে তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হত। ভাটার সময় অনেক ক্ষেত্রে অনেকটুকু পথ কাদাপানি মাড়িয়ে কুলে উঠতে হতো। সন্দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ ছিল অবর্ণনীয়। তাই তারা দীর্ঘদিন থেকে সন্দ্বীপ-সীতাকুণ্ড সরাসরি ফেরি চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছিলো।

সোমবার (২৪ মার্চ) ফেরিঘাট ও ফেরি চলাচলের মধ্যদিয়ে সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। ফেরী চলাচলের মাধ্যমেই দ্বীপের সাথে সারাদেশের যোগাযোগের নতুন একটি মাত্রা স্থাপন হল। দ্বীপবাসী সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হলো।

সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ঘাটে এবং সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া ঘাটে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ফেরিঘাট ও ফেরিসেবার উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সাথে আরো ৫ জন উপদেষ্টা ও ২ জন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন।

ফেরি চলাচল উপলক্ষে আজ থেকে ঢাকা-সন্দ্বীপ রুটে বিআরটিসির বাস চলাচলও উদ্বোধন করা হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বিআরটিসি এসি বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন।

পরে এ উপলক্ষে সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকায় তাঁর কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে আজ থেকে সন্দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হলো। পাশাপাশি স্বাধীনতার এতো বছর পর পর্যন্ত সন্দ্বীপবাসী যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে-সে কলঙ্ক মোচন হলো।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এর সভাপতিত্বে সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার, বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) খোদা বখশ চৌধুুরী, বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।

উপদেষ্টাগণ তাাঁদের বক্তৃতায় ফেরিঘাট ও ফেরিসেবার জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানান। এসময় তারা বলেন, সন্দ্বীপ বাংলাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি দ্বীপ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নতি হলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর্যন্ত এ দ্বীপ উপক‚লটি অবহেলিত অবস্থায় রয়ে গেছে। আজ এ সেবা চালুর মধ্যদিয়ে দ্বীপবাসী একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত পেলো। সন্দ্বীপকে নৌবন্দর ঘোষণা, গুপ্তছড়া ও কুমিরা ঘাট উন্মুক্ত করা এবং ঢাকা-সন্দ্বীপ বাস সার্ভিস চালুকরা, ফেরিঘাট এলাকায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ, নৌপথে ড্রেজিং এর উদ্যোগগুলো সন্দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে তাদের মুক্ত করবে বলে উপদেষ্টাগণ আশা প্রকাশ করেন।

সন্দ্বীপ অংশে দুটি ঘাটের নাম জুলাই- ২৪ এর গণঅভ্যূত্থানে শহিদ সৈকত ঘাট ও শহিদ মাহিন ঘাট নামকরণ করার জন্য নৌ পরিবহন উপদেষ্টা প্রস্তাব দেন। উপস্থিত সুধীজন সমস্বরে হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে ঘাটের নামকরণকে স্বাগত জানান।

উল্লেখ্য-জুলাই ২৪ এর আন্দোলনে সন্দ্বীপের দুইজন শহিদ হন। অনুষ্ঠানে এ দুই শহিদ পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়। পরবর্তিতে এ পরিবারদ্বয়কে আরো ২০ লাখ করে অনুদান প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিস্তারিত জানতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Advertisement
Advertisement