আক্তারুল ইসলাম সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্বে অবহেলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাম্পাফুল ইউনিয়নের অন্যতম জ্ঞান বিতরণের বাতিঘর নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৮৭ সালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় ২ বিঘা জমির উপর দোচালা গোল পাতার ছাওনি, বাশের বেড়া দিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বিদ্যালয়টি শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে সেই থেকে বিদ্যালয়টির তেমন কোন অবকাঠামোর উন্নতি, পরিবর্তন হয়নি। যে কারণে উপজেলার মধ্যে অবহেলিত বিদ্যালয়টিতে বছরের পর বছর পাঠদানে ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকদের নানান ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। যে কারণে আশপাশের ফতেপুর, গোবিন্দ কাটি, বিষ্ণুপুর , ভগবান যশবন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর ভালো ভবন থাকায় অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী সেই দিকে ঝুকতো। বর্তমান বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকার মধ্যে ৪ জন শিক্ষক দিয়ে প্রায় ২ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর ভবনের অভাবে পাঠদানে ব্যাঘাত হচ্ছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুকুল রানী সাংবাদিকদের জানায়, ভবন সংকটে এতদিন এক বেঞ্চে ৫-৬ জন ছাত্র-ছাত্রী কষ্ট করে বসতে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে শ্রেণি কক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নাই। তবে ২০২৪ -২৫ অর্থবছরে নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টারের দ্বিতল ভবন বরাদ্দ এবং নির্মাণের খবর শুনে বেজায় খুশি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘদিনের একটি নতুন ভবনের স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। প্রায় ৬ৃ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সাতক্ষীরা এলজিইডি অফিসের সহকারী পরকৌশলী স্বপন দাস, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার নন্দী সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে চূড়ান্তভাবে ভবন তৈরীর অনুমোদন দেন। ২৮ আগষ্ট মঙ্গলবার ভবন নির্মাণের জন্য চূড়ান্ত জরিপ কাজ সম্পন্ন হবে। গতকাল সোমবার ওই বিদ্যালয়ে গেলে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাহিম, রাজু, সবুজ সহ অনেকে জানায় বিদ্যালয়টি টিনশেড থাকার কারণে ক্লাসে বসতে কষ্ট হয়। এখন নতুন ভবন নির্মাণের কথা শুনে আমরা খুব আনন্দিত। নবীনগর গ্রামের ইউপি সদস্য ও অএ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল গনি, অভিভাবক শাহিনুর রহমান, আব্দুল মজিদ, খালেক সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, স্কুলটির ভবন সঙ্কটে শিক্ষাদান কার্যক্রম ভালোভাবে চলতো না এখন আমরা একটি মজবুত টেকসই ভবন পাবো ফলে আমাদের ছেলেমেয়েরা আনন্দে স্কুলে যাবে। উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, একেবারে পূর্ব সীমান্তে কালীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নবীনগর গ্রামে জরাজীর্ণ ভবনের জায়গায় আমরাও স্কুল ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করে দিয়ে আমাদের সন্তানদের মুখে হাসি দেখলে আমরাই আনন্দিত হব তবে খুব তাড়াতাড়ি ভবনের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।