শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি. আর. আবরার বলেছেতন, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির কনভোকেশনে যোগদান করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নারীদের শিক্ষায় অগ্রগতি হিসেবে এটি একটি বড় মাইলফলক।
শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
উপদেষ্টা বলেন, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি অবস্থানের দিক থেকে এমন একটি স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে পুরান ঢাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর নারীদেরকে উচ্চ শিক্ষা সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এমন স্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সম্পৃক্ত উদ্যোক্তাগণদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকের এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান এমন সময় হচ্ছে যখন আমরা অধিকার বিবর্জিত প্রজন্মকে অধিকার সমৃদ্ধ নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। যা সম্ভব হয়েছে হাজারো তাজা প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি একাত্তরে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, এদেশে বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন এবং ২৪ এর অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই দীপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। শিক্ষকরা যে প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা দিয়ে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের কারিগর হিসেবে তুলেছেন সে জন্য শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান তিনি।
তিনি বলেন, “উচ্চশিক্ষায় যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ আমরা শুরু করবো এবং সেটাকে বাস্তবায়নের দিকেও নিয়ে যাব। আশা করি সকল অংশীদার-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিশবিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারব।
তিনি অভিভাবকগণের উদ্দেশ্যে বলেন, যে আশা নিয়ে আপনার সন্তানকে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছেন, আমি আশা করি আপনাদের সন্তানরা সেই আশার আলো দেখাবে এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের নিয়োজিত করবে।
উপদেষ্টা স্নাতকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বর্তমান শিল্প বিপ্লবের এই যুগে একদিকে যেমন প্রযুক্তির উৎকর্ষতা ও নতুন সম্ভাবনা রয়েছে, অন্যদিকে রয়েছে নানাবি চ্যালেঞ্জ। এগুলি তোমাদের মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আমি এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে যেতে চাই, যেখানে সৃষ্টি হবে সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে সাথে আত্ম উন্নয়ন পথ। যা হবে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে সহায়ক। যা হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক অধিকার।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমি এমন শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে, বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, ভিসি, প্রোভিসি, শিক্ষকমন্ডলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত।