শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে ভুল চিকিৎসায় আট মাসের অন্ত:স্বত্তা নারী ইসমত আরা (৩৪) মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বজনরা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা আল হেরা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী আট মাসের অন্ত:স্বত্তা। রবিবার দুপুরে তার প্রেসার বেড়ে গেলে আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আয়েশা সিদ্দিকা তাকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চিকিৎসা দেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে আমি স্ত্রীর কাছে গিয়ে দেখি তার অবস্থা ভালো না। সে অনেকটাই অচেতন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরে আমার স্ত্রীর মরদেহ আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে আসি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় দুই যুগ দাম্পত্য জীবনে আমার কোনো সন্তান নেই। দীর্ঘ সময় ভারতে থেকে চিকিৎসা করালে আমার স্ত্রী অন্ত:স্বত্তা হয়। একটি সন্তাানের আশায় স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়ে সব শেষ করেছি। এবার হয়তো বাবা ডাক শুনতে পারব। কিন্তু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় স্ত্রী সন্তাানের এক সঙ্গে মৃত্যু হলো।
স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালে অন্ত:স্বত্তার মরদেহ নিয়ে আসলে স্বজনরা হামলা করে হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্স ও ভেতরে থাকা ফার্মেসিতে ভাংচুর করে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল হোসাইন জানান, হাসপাতালে জরুরি রোগীর সেবা দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ওই রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে ওই রোগীর মৃত্যু হলে আমাদের কি করণীয়। রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালে ভাংচুর করেছে। এখন হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. প্রণয় ভূষণ দাস জানান, ভুল চিকিৎসায় অন্ত:স্বত্তা নারীর মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। নিহতের স্বজনরা অভিযোগ দেওয়া পর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, হাসপাতালে হামলা করে ভাংচুরের খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।