সাতক্ষীরার তালার খেশরা নায়েব আশরাফুজ্জামান ঘুষ নেন গুনে গুনে,অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মিলছেনা

আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা :

সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকারি সেবা প্রদানের বিপরীতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠছেন। বিষয়েটি নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভুক্তভোগীরা লিখিতভাবে   অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার মিলছেনা।

লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান খাতা খুলে ঘুষ বাণিজ্যের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোন কিছুতেই বন্ধ হচ্ছেনা তার এই ঘুষ গ্রহণের কারবার।

জানা যায়, নানা রকম অনিয়মের কারণে পূর্বের নায়েব গগন বাবুকে খেশরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে বদলি করা হয়।

পরবর্তীতে আশরাফুজ্জামানকে শ্যামনগরের রতনপুর থেকে বদলি করে খেশরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে পাঠানো  হয়।

শ্যামনগর উপজেলার রতনপুর ভূমি অফিসের নায়েব থাকা কালে ঘুষ গ্রহনসহ নানা অনিয়মের কারনে বদলি হতে হয় আশরাফুজ্জামানকে। রতনপুর থাকা কালিন সরকারি বাজারস্থ সরকারি জায়গার দোকান বরাদ্দের নামে লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহনসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সেখান থেকে বিতাড়িত হতে হয় তাকে।

তালার খেশরা ভূমি অফিসটি পাটকেলঘাটা এসিল্যান্ড অফিস ও তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে দুর্গম এলাকায় হওয়ায় সেখানে ঘুষ বাণিজ্যের রাম রাজত্ব খুলে বসেছে এই ঘুষখোর নায়েব আশারফুজ্জামান।

টাকা ছাড়া তিনি কোন কাজ করেনা। প্রতিটি ফাইল যেন টাকার বক্স বলে মনে করেন তিনি। তথ্য অনুসন্ধানে তার একাধিক নমুনা পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর ভুক্তভোগীদের এক লিখিত অভিযোগে জানা যায়, খেশরা ভূমি অফিসের বর্তমান নায়েব আশরাফুজ্জামান ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকেই প্রতিটি নাম জারির রিপোর্ট  প্রদানে ১ হাজার  টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ গ্রহণ করেন।

অন-লাইনে খাজনা দেওয়ার জন্য চার হাজার টাকা থেকে শুরু করে নেন মোটা অংকের অগ্রিম চকচকা নোট। খাজনার টাকা নেওয়ার পরে দুই থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে চেক- দাখিলা দেন। তখন খাজনার চেক – দাখিলায়  টাকার পরিমাণ দুই-তিন শত টাকা উল্লেখ থাকে। অথচ একটা চেক – দাখিলার বিপরীতে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার বিষয়টি বললে  বাকি টাকা তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফেরত দেয় না। তিনি আদালতের তদন্ত প্রতিবেদনের  ক্ষেত্রে দুই পক্ষের নিকট থেকে ঘুষ  গ্রহন করেন। যারা পরিমানে বেশি দেন তাদের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।

অফিসে তার মনোনীত পোষ্য দালাল ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না বলে জানান ভুক্তভোগী অভিযোগকারীরা। এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি  সহকারী কর্মকর্তা ( নায়েব) আশরাফুজ্জামান এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য নিতে গেলে বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য না করে এড়িয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ের পাটকেলঘাটাস্থ তালা  উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার( ভূমি)আবদুল্লাহ আল- আমিনের নিকট বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, নায়েব আশরাফুজ্জামান এর বিরুদ্ধে  অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *